ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কেন চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশের যৌথ মারের ভয়ে আছেন মোদি?

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ১৯ মে ২০২৫

কেন চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশের যৌথ মারের ভয়ে আছেন মোদি?

ছবি: প্রতীকী

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এখন দক্ষিণ এশিয়ায় এক নতুন ভূরাজনৈতিক চাপে পড়েছেন, যা তৈরি হয়েছে চীন, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের সম্ভাব্য সমন্বিত কৌশলগত সংযুক্তির ফলে। এক সকালে ভারতের তিনটি প্রধান দৈনিকটাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস, এবং দ্য হিন্দুএকযোগে একটি খবর ফলাও করে প্রকাশ করে: বাংলাদেশের লালমনিরহাটে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (PLA) সহায়তায় গড়ে উঠছে একটি আধুনিক এয়ার ডিফেন্স ঘাঁটি। এই খবর ভারতের প্রতিরক্ষা ও কূটনৈতিক মহলে কার্যত ‘সাইকোলজিক্যাল শকওয়েভ’ তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, PLA’র রাডার বিশেষজ্ঞ, স্যাটেলাইট ইউনিট এবং এভিয়েশন টিম একাধিকবার লালমনিরহাট ঘাঁটি পরিদর্শন করেছে। চীনা প্রযুক্তিতে তৈরি প্যাসিভ সারভেইলেন্স সিস্টেম ইতিমধ্যেই বসানো হয়েছে, যা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আকাশসীমা পর্যবেক্ষণের জন্য যথেষ্ট কার্যকর। প্রতিবেদনে একে ‘কোয়াড ডিনায়েল জোন’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছেযেখানে চীন ও তার মিত্ররা QUAD সদস্যদের কার্যকলাপ নজরদারিতে রাখবে।

এই ঘাঁটির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও তাৎপর্যপূর্ণ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তৈরি লালমনিরহাট বিমানঘাঁটি পরে অকার্যকর হয়ে পড়লেও, সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এটিকে পুনর্গঠনের ঘোষণা দেয়। কিন্তু ভারতের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছেএটি আসলে চীনের পূর্ণ সহযোগিতায় গড়ে ওঠা একটি সামরিক এয়ারবেস, যার গভীরে রয়েছে PLA’র কৌশলগত উদ্দেশ্য।

সম্প্রতি পাকিস্তান সীমান্তে ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার পর ভারত বুঝতে পারছেচীন-পাকিস্তান সম্মিলিত ডিফেন্স সিস্টেম কতটা মারাত্মক। আর এবার যদি সেই সিস্টেম বাংলাদেশে সক্রিয় হয়, তাহলে ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল কার্যত ‘ঘিরে ফেলা’র শিকার হবে।

ভারতের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের এক সদস্যের মন্তব্য আরও স্পষ্ট, ‘এটি শুধু একটি এয়ারবেস নয়, এটি PLA’র বাংলাদেশে স্থায়ী কৌশলগত উপস্থিতির ইঙ্গিত।’

দিল্লি শুধু প্রতিবেদন প্রকাশেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নতুন ইন্টিগ্রেটেড ব্যাটালিয়ন হাব গড়ে তোলা হচ্ছে, বিশেষ করে অরুণাচল, ত্রিপুরা এবং নাগাল্যান্ড সীমান্তে। পাশাপাশি RAW-এর বিশেষ অপারেশন ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম ঘেঁষা এলাকায়। তাদের প্রধান লক্ষ্য‘প্রভাব পুনঃপ্রতিষ্ঠা’ এবং PLA-র তৎপরতা প্রতিহত করা।

চীন-পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ যদি সত্যিই একটি নীরব কৌশলগত বলয় তৈরি করে, তবে তা ভারতের জন্য ‘হার্ট অ্যাটাক’-এর সমান হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ ভূখণ্ডের যুদ্ধ এখন শুরু হচ্ছে আকাশে, এবং আকাশ হারালে ভূখণ্ড রক্ষা করা কঠিন।

দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে এখন স্পষ্ট বিভাজন, একদিকে ভারতের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের তাস, অন্যদিকে চীনের আর্থিক, সামরিক ও কৌশলগত ঘুঁটি। মোদির দুশ্চিন্তা এখানেইএই নতুন জোট যদি বাস্তবে রূপ পায়, তবে ভারতের আঞ্চলিক নেতৃত্বের আকাঙ্ক্ষা চরম ধাক্কা খাবে।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=NW32pG8IfX8

রাকিব

×