
ডিএমপি কমিশনার শেখ মোঃ সাজ্জাত আলী
যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা আওয়ামী লীগের দিকে ইঙ্গিত করে ডিএমপি কমিশনার শেখ মোঃ সাজ্জাত আলী পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে বলেছেন, নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম ও নাশকতার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। জনগণের নিরাপত্তা ও সেবা প্রদানে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে যেতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে এপ্রিল-২০২৫ মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ আইন ও বিধি দ্বারা পরিচালিত একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পোশাকে, উপস্থাপনায়, সেবায় এবং দৃঢ়তায় নিজেদের অনন্য উচ্চতায় তুলে ধরতে হবে। দায়িত্ব পালনে কোনো প্রকার অপেশাদার আচরণ ও শিথিলতা প্রদর্শন করার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। মানুষের সঙ্গে আচরণে বিনয়ী হতে হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রতিটি থানায় আলাদা আলাদা টিম করে তদন্ত, মাদক, চোরাইমাল উদ্ধারে কাজ করতে হবে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আরও বেশি তৎপর হতে হবে এবং মামলা নিষ্পত্তির হার আরও বাড়াতে হবে।
সাজ্জাত আলী বলেন, বিরাজমান পরিস্থিতিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিটি সদস্য দৃঢ় মনোবল নিয়ে পেশাদারিত্বের সঙ্গে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ বলেন, জনগণ যেটা চায় তা পূরণে সচেষ্ট হতে হবে। প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে ভাড়াটিয়াদের তথ্য নিয়মিত হালনাগাদ করতে হবে।
সভায় যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মোঃ ফারুক হোসেন এপ্রিল-২০২৫ মাসের সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি যেমন-ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি, সিঁধেল চুরি, খুন, অপমৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনা, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন মামলা সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করেন। এসময় ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন।
মাসিক অপরাধ সভায় এপ্রিল মাসে ঢাকা মহানগরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও জননিরাপত্তা বিধানসহ উত্তম কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাগণকে পুরস্কৃত করেন ডিএমপি কমিশনার।
মাসিক অপরাধ সভায় শ্রেষ্ঠ হলেন যারা ॥ ঢাকা মহানগরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও জননিরাপত্তা বিধানসহ উত্তম কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করেছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মোঃ সাজ্জাত আলী। এপ্রিল মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় উত্তম কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুলিশ কর্মকর্তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তিনি।
গত এপ্রিল মাসে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অপরাধ বিভাগের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছে উত্তরা বিভাগ। শ্রেষ্ঠ থানা হয়েছে উত্তরা পশ্চিম থানা।
সহকারী পুলিশ কমিশনারদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন- রমনা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন। যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ এসআই নির্বাচিত হয়েছেন আদাবর থানার মোঃ কবির উদ্দিন ও ভাটারা থানার মোঃ হাফিজুর রহমান।
এএসআইদের মধ্যে যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন যাত্রাবাড়ী থানার মোঃ আক্তারুজ্জামান ম-ল পলাশ ও মুগদা থানার আমিরুল ইসলাম। গোয়েন্দা বিভাগের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছে ডিবি-রমনা বিভাগ। শ্রেষ্ঠ টিম লিডার নির্বাচিত হয়েছেন ডিবি-উত্তরা বিভাগের বিমানবন্দর জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ মাহমুদুল হাসান চৌধুরী। ট্রাফিক বিভাগের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছে ট্রাফিক-উত্তরা বিভাগ।
যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক সার্জেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন বাড্ডা জোনের মোঃ মাসুদ রেজা ও ওয়ারী জোনের সুমন মাহমুদ তানভীর। এছাড়া দ্রুততম সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন ও আসামি গ্রেপ্তার করায় ডিএমপির রমনা বিভাগের শাহবাগ থানার সংশ্লিষ্ট টিমকে নগদ এক লাখ টাকা বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মোঃ ফারুক হোসেনের সঞ্চালনায় ডিএমপির মাসিক এ অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ সরওয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মোঃ নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মোঃ মাসুদ করিম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মোঃ শওকত আলীসহ যুগ্ম পুলিশ কমিশনারসহ, উপ-পুলিশ কমিশনাররা, ডিএমপির সকল থানার অফিসার ইনচার্জ ও বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।