
ছবি: সংগৃহীত
শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগকেই আমি ‘তুই’ বলে ডাকি।এই বিষয়ে আমাকে একটু ব্যক্তিগত কথা বলতে হয়। যদিও আমি সাধারণত ব্যক্তিগত কথা বলতে স্বচ্ছন্দবোধ করি না, তবুও বলছি—কারণ প্রসঙ্গটি উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি বহু কিছু বাদ দিয়ে, বিশ্ববিদ্যালয়কে ভালোবেসেই এই চাকরি করি। কারণ, একে আমি একটি ব্রত মনে করি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা সাংবাদিক, তাদেরকেও আমি ‘তুই’ বলেই ডাকি। আমি বিশ্বাস করি, এই চাকরিতে আজ আছি, কাল থাকবো না। প্রায় ৩৮ বছরের চাকরিজীবনে আমি উপলব্ধি করেছি—মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হয় মমতার, ভালোবাসার ভিত্তিতে।
তিনি আরো বলেন, আমি যখন এই পদে থাকবো না, তখন আপনারা বড় সাংবাদিক হবেন, আমার ছাত্ররা বড় বড় জায়গায় যাবে। তখন যদি তাদের কাউকে দেখে আমি বলতে পারি—“বাপ, তুই কেমন আছিস?”—এই সম্পর্কটাই তো আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ। এই সম্পর্কই মনটাকে বড় করে তোলে।
তিনি জানান, আমার ছাত্র মারা গেছে—এটা চরম বেদনার বিষয়। যারা এসেছে, তারা স্বাভাবিকভাবেই কষ্টে থাকবে, রাগে থাকবে—এটা খুবই স্বাভাবিক। আমি সবসময় চেষ্টা করি প্রথমেই সামনে গিয়ে দাঁড়াতে, আমার সহকর্মীদের সঙ্গে একসাথে থাকতে। কারণ, আমি যদি আমার ছাত্রদের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলতে না পারি, অথবা তারা যদি আমার কাছে আসতে না পারে, তাহলে শিক্ষক হিসেবে আমার এত বছরের পথচলা বৃথা।
তিনি আরো বলেন, আমার অফিস সবসময় সবার জন্য খোলা। আমি চাই, আমাদের মধ্যে এমন একটা সম্পর্ক তৈরি হোক—যেটা শুধুই আনুষ্ঠানিক দপ্তরের নয়, বরং একধরনের নির্ভরতা, বিশ্বাস, ভালোবাসার জায়গা থেকে তৈরি হয়।
আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে সংকটময় সময়ে শিক্ষার্থীদের ভালোবেসে দায়িত্ব নিয়েছি। সেই দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছি। এটি কোনো রুটিন পদোন্নতি ভিত্তিক চাকরি নয়। কে বড়, কে ছোট—তা নয়; আমি যদি আমার ছাত্রকে বুকে টেনে নিতে না পারি, যদি তাকে বলতে না পারি—“বাবা, এটা আমার পছন্দ হচ্ছে” কিংবা “এটা পছন্দ হচ্ছে না”—তাহলে শিক্ষক হিসেবে আমার এত বছরের সাধনার পূর্ণতা কোথায়? আমি যা আছি, তাই থাকবো।
এসএফ