
ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর এম এইচ তামিম জানিয়েছেন, জুলাই বিপ্লব এবং শেখ হাসিনার শাসনামলে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত বর্তমানে প্রি-ট্রায়াল পর্যায়ে রয়েছে। তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের আওতাধীন তদন্ত সংস্থা, যা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সরকারি সংস্থা।
প্রসিকিউটর তামিম জানান, ইতোমধ্যে প্রসিকিউশন বিভাগ দুটি তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছে। প্রথমটি রাজধানীর চানখারপুল এলাকায় জুলাই বিপ্লবের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ সম্পর্কিত। দ্বিতীয়টি শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তৎকালীন আইজিপির নেতৃত্বে সারা দেশে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ সংক্রান্ত। এই প্রতিবেদনগুলো ট্রাইবুনালে উপস্থাপনের প্রস্তুতি চলছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কেন দীর্ঘ সময় ধরে চলে, তার ব্যাখ্যায় প্রসিকিউটর বলেন, “মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার সাধারণ হত্যাকাণ্ডের বিচারের মতো নয়। যদি একজন ব্যক্তি আরেকজনকে হত্যা করেন, সেটা একটি নির্দিষ্ট হত্যাকাণ্ড। কিন্তু যখন একটি সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে কোনো অঞ্চলে গণহত্যা চালায়, সেটা আর সাধারণ খুন থাকে না—তা পরিণত হয় মানবতাবিরোধী অপরাধে।”
তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের অপরাধের বিচার করতে গেলে শুধু ঘটনাস্থলের নয়, বরং দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করতে হয়। এ কারণে তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ায় স্বাভাবিকভাবেই দীর্ঘ সময় লাগে।”
প্রসঙ্গত, জুলাই আন্দোলনে প্রায় ১,৫০০ জন মানুষ নিহত হয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়। সেই ঘটনার বিচার কার্যকর করতে হলে সারা দেশের নথিপত্র ও সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা একটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া।
তবে জনগণের মাঝে বিচার প্রক্রিয়ার ধীরগতির যে প্রশ্ন উঠছে, তা নিয়ে প্রসিকিউটর বলেন, “আমরা জনগণের সেই উদ্বেগ বুঝি। তবে আইন অনুযায়ী এই বিচার একটি অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও জটিল প্রক্রিয়া। যথাযথভাবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সময় লাগবে।”
আসিফ