
সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের পালিয়ে যাওয়া ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। পাশাপাশি তিনি জানান, পালানোর সহযোগীতার সাথে যারা জড়িত তাদের চিহিৃত করে চাকুরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছি। এ ছাড়া এ ঘটনায় একটি হাই পাওয়ার কমিটি গঠনের আদেশ দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) সন্ধ্যায় নীলফামারীর সৈয়দপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও জুলাই আন্দোলনের ছাত্র নেতাদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ ঘোষণা দেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সন্ধ্যায় সৈয়দপুর থেকে বিমানে ঢাকা যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে প্রবেশের পূর্বে হত্যা মামলার আসামি সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ দেশ থেকে পালিয়ে গেল কীভাবে, এর জবাব চেয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার গাড়ির বহর আটকে দেয় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
আন্দোলনকারীরা সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করে স্লোগান দেন। একপর্যায়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচি থেকে সরে আসে। এ সময় কৃষি সচিব ডক্টর মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়াঁন, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে বিমানে সৈয়দপু হয়ে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা দিনাজপুরের বিরল সফরে যান। সেখানে উপজেলার মোকলেছপুর ইউনিয়নের ঢেলপীর ব্লকে বোরো ব্রি ধান-৮৮ কর্তন করে কৃষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় অংশ নেয়। সেখানে তিনি কৃষি কর্মমকর্তাদের উদ্যেশে বলেন, কৃষির উন্নয়নে কৃষকদের উঠান বৈঠকের জন্য প্রচুর টাকা আপনাদের দেওয়া হয়। এ নিয়ে অনেক অভিযোগ এসেছে। আপনারা উঠান বৈঠকের পয়সা পকেটে ঢুকাইয়েন না। পকেটে ঢুকাইলে আপনারা থাকতে পারবেন না। উঠান বৈঠকের জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করবেন।
এর আগে তিনি বলেন ভীতির কোনও কারণ নাই, আমাদের সীমান্তে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা রয়েছে। এখানে কোনও সমস্যা নাই। কৃষকরা ভালোভাবে ধান কাটতে পারবে। উপদেষ্টা বলেন, ৪০ শতাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। যখন আমাদের সাড়ে ৭ কোটি মানুষ ছিল সেই সময়ে কৃষিজমির সংখ্যা বেশি ছিল। কিন্তু এখন লোকসংখ্যা ১৮ কোটি, কৃষিজমি কমে গেছে। উন্নত জাত এবং কৃষক ও বিজ্ঞানীদের কঠোর পরিশ্রমের কারণে উৎপাদন ভালো।
বরেন্দ্রকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘কৃষকরা যেন ন্যায্যমূল পায়, আর কৃষকদের উৎপাদন খরচ যেন কমানো যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। আর ওপরে যারা চাকরি করে, দুর্নীতি কমাতে হবে। কৃষি জমির বিষয়ে বলেন, নতুনভাবে আইন করা হবে। ভ‚মি ব্যবহার নীতিমালা, কৃষি জমি সুরা আইন নতুনভাবে করার চিন্তা-ভাবনা আছে, কিছু দিনের মধ্যেই করা হবে। ভাটা যেন না চলে সেজন্য আমরা নতুনভাবে চিন্তা করতেছি।
এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপরে নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) তরিকুল ইসলাম, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার শহীদুল ইসলাম, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলীসহ রংপুর বিভাগের ৮ জেলার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সাংবাদিকদের বিশৃঙ্খলা দেখে তিনি বলেন, এখানে কয়েকজন আছেন। আপনারা নিজেরা নিজেরাই শান্তি-শৃঙ্খলা রাখতে পারেন না। তাহলে আমার পক্ষে ১৮ কোটি লোকের শান্তি-শৃঙ্খলা রাখতে কী কষ্ট বোঝেন। আপনারা নিজেরা সব শিতি লোক এখানে, সমাজের উচ্চ শ্রেণির লোক। আপনাদের শান্তি-শৃঙ্খলা রাখতে কত কষ্ট হয়। এ জন্য আপনারা চেষ্টা করবেন, কোনও কিছু লেখেন যে, আমাদের কাজটা করতে কি পরিমাণ কষ্ট হচ্ছে।
রিফাত