ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৭ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ

বিপিসি ও পরমাণু শক্তি কমিশনে দুদকের অভিযান

স্টাফ রির্পোটার

প্রকাশিত: ২৩:২৯, ৬ মে ২০২৫

বিপিসি ও পরমাণু শক্তি কমিশনে দুদকের অভিযান

দুদকের অভিযান

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) কার্যালয়ে ও বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এনফোর্সমেন্ট টিম। মঙ্গলবার দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
দুদক জানায়, সিলিন্ডারজাত সরকারি গ্যাস বিক্রয়ে অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মাত্র ৬৯০ টাকার সরকারি এলপি গ্যাস কীভাবে বাজার থেকে উধাও কিংবা অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে তার কারণ জানতেই ওই অভিযান।
মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. রাজু আহমেদ, তানজির আহমেদ ও আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) কার্যালয়ে ওই অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাত্র ৬৯০ টাকার সরকারি গ্যাস কেন সাধারণ মানুষ পাচ্ছে না। গত ৪১ বছর ধরে বিপিসি বছরে গড়ে ১২ লাখ গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ করছে। সেটা পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। অথচ ১৩০০ থেকে ১৩৫০ টাকা বিক্রি হয় সেই গ্যাস। প্রতিবছর লুটপাট হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা। ডিলার থেকে শুরু সরকারি কর্মকর্তা পর্যন্ত গ্যাস লুটপাট হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে আকতারুল ইসলাম জানান, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেনিং কোর্সে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের বিজ্ঞানীদের না পাঠিয়ে সাধারণ কর্মকর্তাদের বিদেশে পাঠানোসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অভিযানে ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ পাওয়ার পরও জিও না দেওয়া ও ভিন্ন কর্মকর্তাদের বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে চালানো অভিযানে এমন সত্যতা পওয়া যায়। 
দুদক উপপরিচালক জানান, অভিযানে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। আরও রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করবে। এর পর সংগৃহীত রেকর্ডপত্র বিশ্লে­ষণ করে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবে। যার ভিত্তিতে কমিশন পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেবে।
দুদক জানায়, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের বিজ্ঞানীদের বেতন-ভাতা প্রদানে অনিয়ম ও হয়রানি করার অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে প্রাথমিক পর্যালোচনায় ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ পাওয়ার পরও জিও (গভর্নমেন্ট অর্ডার) নামঞ্জুর করার বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়।

নিয়ম অনুযায়ী বিজ্ঞানীদের  বৈদেশিক প্রশিক্ষণে না পাঠিয়ে ভিন্ন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে পাঠানো হচ্ছে কি না? তা যাচাইয়ের নিমিত্তে রেকর্ডপত্র অভিযানকালে সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়া বেতন-ভাতা প্রদানে অনিয়মের বিষয়টি পর্যালোচনার নিমিত্তে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
অভিযোগ বলছে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রিয়া, কোরিয়াসহ কয়েকটি দেশে বিজ্ঞানীদের ১৪টি সম্মেলন ও কর্মশালায় অংশগ্রহণের জন্য ১৪ জনকে মনোনীত করেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, যার মধ্যে একজন বিজ্ঞানীর নামও নেই। যাদের মনোনয়ন করা হয়েছে তাদের সকলেই মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদ মর্যাদার কর্মকর্তা। যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত নিউক্লিয়ার সিকিউরিটির ওপর একটি ইন্টারন্যাশনাল  ট্রেনিং কোর্সে কোনো বিজ্ঞানীকে না পাঠিয়ে পাঠানো হয় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে।

একইভাবে অষ্ট্রিয়ায় ভিয়েনায় ইন্টারন্যাশনাল  নেটওয়ার্ক ফর নিউক্লিয়ার সিকিউরিটির ওপর অনুষ্ঠিত প্রোগ্রাম, অস্ট্রিয়ায় ইনসাইডার থ্রেট ইউজিং দি শাপারস থ্রিডি মডেলের ওপর কর্মশালা, অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত সেফ ট্রান্সপোর্ট অব  রেডিওকেটিভ  মেটেরিয়াল প্রোগ্রামসহ ১৪টি কর্মশালায় পাঠানোর জন্য মনোনীত করা হয় সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের।

আরো পড়ুন  

×