ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

নিষেধাজ্ঞা শেষে ভোলার নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ জেলেরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা

প্রকাশিত: ১৭:৫২, ৩ মে ২০২৫; আপডেট: ১৮:০৫, ৩ মে ২০২৫

নিষেধাজ্ঞা শেষে ভোলার নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ জেলেরা

ছবি: সংগৃহীত

দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে জেলেরা মাছ ধরতে নেমে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশের দেখা মিলছে না। জেলেরা কাঙ্খিত ইলিশ মাছ না পাওয়ায় কিভাবে তারা ধার দেন পরিশোধ করবে তা নিয়ে হতাশায় পড়েছেন।

তবে মৎস্য কর্মকর্তা বলছে, আগামী পূর্ণিমার জোতে জেলেরা কাঙ্খিত ইলিশা পাবে। সেই আশায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন ভোলার দুই লক্ষাধিক জেলে। সংশ্লিষ্টরা জানান, “ইলিশসহ অন্যান্য মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার জুড়ে সব ধরনের মাছ ধরার উপর সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এতে করে সকলধরনের মাছ ধরা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ছিল। সরকারের এই নিষেধাজ্ঞা শেষ হয় গত (বুধবার) মধ্যরাতে। তার পর থেকেই ভোলার নদীতে উৎসব মুখর পরিবেশে জেলো মাছ ধরতে নেমে পড়েন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর চির চেনা চিত্র ফিরে এসেছে। জেলেদের নৌকা ও ট্রলারে নদীতে চলছে মাছ ধরার ব্যস্ততা। নদীর তীরের ঘাটগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশ। সারারাত নদীতে মাছ ধরার পর একে একে জেলেরা ভোলার ইলিশা মাছঘাটসহ বিভিন্ন ঘাটে এসে পৌঁছাচ্ছেন। কেউ মাছ তুলছেন ঝুড়িতে, কেউবা সেগুলো নিয়ে যাচ্ছেন আড়ৎদার ও পাইকারদের কাছে। কেউ অলস বসে নেই। ফিরে এসেছে আগের মতো কর্মচাঞ্চল্য। ঘাটে মাছ আসার সাথে সাথে শুরু হয় দাম হাঁকার প্রতিযোগিতা। আড়ৎদার ও মহাজনেরা একের পর এক দাম ডেকে মাছ কিনে নিচ্ছেন। কেউ মাছ তুলছেন, আবার কেউ সেই মাছ নিয়ে যাচ্ছেন ,বরফ দিয়ে বাক্সে রাখছেন। তবে জেলেদের মুখে হাসি থাকলেও তার পেছনে লুকিয়ে আছে একরাশ হতাশা। নিষেধাজ্ঞা শেষের পরপরই আশা ছিলো নদীতে তাদের জালে ভরপুর ইলিশ ধরা পড়বে। কিন্তু আশানুরূপ ইলিশ ধরা না পড়ায় হতাশ হয়েছেন জেলেরা।

তাদের অভিযোগ, নদীতে মাছ কম এবং যে কয়টি ধরা পড়ছে তা আকারে ছোট। অনেকের নৌকায় মাত্র দুই-চারটি ইলিশ দেখা গেছে। গুটি কয়েক মাছ দিয়ে তাদের ট্রলারের খরচের টাকাও ঠিক মতো ওঠে। জেলেরা জানান, দুই মাস নদীতে নামতে পারিনি। ধার দেনা করে সংসার চালিয়েছি। এখন যদি মাছ না পাই, তবে সেই দেনা শোধ করবো কী করে? নিষেধাজ্ঞার পর নদীতে এমন অবস্থা! এভাবে চললে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। এদিকে নদীতে মাছ কম থাকায় বাজারে ইলিশের দামও বেশী। ছোট আকৃতির ইলিশও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ইলিশ। তবে ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, বৃষ্টি আশার সাথে সাথে ও পূর্ণিমার জো আসার পর নদীতে কাঙ্খিত বড় ইলিশ ধরা পড়বে। গতবারের তুলনায় এই ইলিশ উৎপাদন আরো বেশী পাওয়া যাবে প্রত্যাশা করেন।

তিনি আরো বলেন, আমাদের ১ লক্ষ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের কাঙ্খিত লক্ষমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে বলেও তিনি মনে করেন। কারন জাটকাকে এবার সঠিক ভাবে রক্ষা করতে পেরেছেন বলেও তিনি দাবী করেন।

আসিফ

×