
ছবিঃ সংগৃহীত
“১৯৩৩ সালের নাৎসি জার্মানি আজ ইতিহাসে নিন্দিত। ৯২ বছর পরও কেউ কি হিটলার ও তার দোসরদের পক্ষ নিতে পারেন? ঠিক একইভাবে, আজ যারা বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে কাজ করছেন, ইতিহাস তাদেরও ক্ষমা করবে না।” — এমন মন্তব্য করেছেন প্রবাসী সাংবাদিক ও বিশ্লেষক ড. কনক সরওয়ার।
তার ইউটিউব চ্যানেলের সাম্প্রতিক এক আলোচনায় কনক সরওয়ার বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম আবারও ‘দমননীতি’র মুখে পড়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, সরকারপন্থী মিডিয়া হাউজগুলো বর্তমানে এমন কিছু সাংবাদিককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করছে, যারা সরকারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেছিলেন।
তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন তোলার জেরে দীপ্ত টিভি, এটিএন বাংলা এবং চ্যানেল আইয়ের অন্তত চার সাংবাদিক সম্প্রতি চাকরিচ্যুত হয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন দীপ্ত টিভির মিজানুর রহমান ও মাহমুদ শাউন, এটিএন বাংলার ফজলে রাব্বি এবং চ্যানেল আইয়ের রফিকুল বাশার। দীপ্ত টিভি সাময়িকভাবে সংবাদ সম্প্রচারও বন্ধ রেখেছিল, যা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনা হয়।
ড. সরওয়ার বলেন, “এই সাংবাদিকেরা তাঁদের ব্যক্তিগত মত নয়, বরং তাঁদের চ্যানেলের পলিসি অনুযায়ী প্রশ্ন করেছেন। শুধুমাত্র প্রশ্ন তোলার কারণে তাঁদের চাকরিচ্যুতি সাংবাদিকতার স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত ১৫ বছরে মাহমুদুর রহমান, রুহুল আমিন গাজী, আসাদ চৌধুরীর মতো বহু সাংবাদিক কারাবরণ করেছেন, অনেকে হারিয়েছেন চাকরি। “তখন কেউ কথা বলেনি,” — মন্তব্য কনক সরওয়ারের।
এছাড়া জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশে ২০০৯ সালের পর থেকে প্রায় ১৪০০ জন গুম বা বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। “এইসব তথ্য সামনে এলেও রাষ্ট্র কোনো জবাবদিহি করছে না,” তিনি বলেন।
গণমাধ্যম মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ড. সরওয়ার বলেন, “আপনারা আপনাদের মিডিয়ার এডিটোরিয়াল পলিসি নতুন করে নির্ধারণ করুন। যারা ফ্যাসিবাদের পক্ষে কথা বলছে, রাষ্ট্রীয় নিপীড়নকে স্বাভাবিক করছে, তাদের সাংবাদিকতার জায়গা দেওয়া উচিত নয়।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে একশ’র বেশি সাংবাদিকের ব্যাংক একাউন্টে ১০ কোটি টাকার ওপরে জমা আছে, যা সাংবাদিকতা পেশার স্বচ্ছতার প্রশ্ন তোলে।
শেষে তিনি সতর্ক করেন, “অনেকেই অতীতে নিরব ছিলেন, এখন ‘ভুয়া প্রতিবাদ’ করছেন। তারা আসলে সেই ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থাকেই আবার ফিরিয়ে আনতে চাইছেন।”
তথ্যসূত্রঃ https://www.facebook.com/share/v/1FNoXYLU1k/
মারিয়া