ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

দলের লক্ষ্য জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা ॥ তারেক রহমান

বিএনপির বিশাল শোডাউন

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৩৬, ৮ নভেম্বর ২০২৪

বিএনপির বিশাল শোডাউন

.

জাতীয় বিপ্লব সংহতি দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে বিশাল শোডাউন করে বর্ণাঢ্য ্যালি করেছে বিএনপি। শুক্রবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে ্যালি শুরু হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউতে গিয়ে শেষ হয়। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের ঢল নামে। বর্ণিল সাজে সজ্জিত হয়ে ঢাক ঢোল বাজিয়ে নেচে গেয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে দলের নেতা, কর্মী সমর্থকরা ্যালিতে অংশ নেয়। সময় স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন তারা।

 নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ্যালির আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। সময় ্যালি উদ্বোধন করে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, বিএনপির লক্ষ্য জনগণের ভোটের অধিকার গণতন্ত্র  নিশ্চিত করা। আর সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশে গণতন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু চলবে না।

্যালি শুরুর আগে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া করা হয়। বিকেল সাড়ে তিনটায় নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ্যালি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সন্ধ্যায় মানিক মিয়া এভিনিউতে গিয়ে শেষ হয়।

বিকেল ৩টা থেকে ্যালি শুরুর কথা এক সপ্তাহ আগে  জানানো হলেও নেতা, কর্মী সমর্থকরা বেলা ১১টা থেকেই নয়াপল্ট ৫নং বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে জড়ো হতে থাকেন। জুমার নামাজের পর পর বেলা ২টার মধ্যেই বিএনপি কার্যালয় আশপাশের এলাকায় লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। ফকিরাপুল মোড় থেকে কাকরাইল মসজিদ পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় রাজপথ অলিগলি।

্যালিতে অংশ নিতে ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, মহিলা দল. মুক্তিযোদ্ধা দল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মৎস্যজীবী দল, ওলামা দল জাসাসসহ বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আলাদা আলাদা ব্যানারে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে মতিঝিল, আরামবাগ, ফকিরাপুল, পল্টন, কাকরাইল, বিজয়নগর, মালিবাগ, শান্তিনগর, মৎস্যভবন এলাকায় অবস্থান নেয় সময় ওইসব এলাকাসহ আশপাশের এলাকা স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়। নেতাকর্মীদের দেওয়া স্লোগানের মধ্যে ছিল স্বাধীনতার অপর নাম জিয়াউর রহমান, গণতন্ত্রের অপর নাম জিয়াউর রহমান, তারেক রহমান বীরের বেশে আসবে ফিরে বাংলাদেশে, দেশ গড়েছেন শহীদ জিয়া নেত্রী মোদের খালেদা জিয়া, অবিলম্বে নির্বাচন দিতে হবে দিতে হবে ইত্যাদি। সময় তাদের পরনে ছিল রং-বেরঙের ক্যাপ গেঞ্জি। তাদের মধ্যে কারও হাতে জাতীয় পতাকা এবং কারও হাতে শোভা পায় জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া তারেক রহমানের ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড। বিভিন্ন সংসদীয় আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের ছবিও অনেককে বহন করতে দেখা যায়।

্যালি শুরু হলে মাইকে বাজে দেশাত্মবোধক গান বাউল গান।  বাদ্যের তালে তালে নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে ্যালি নিয়ে মানিক মিয়া এভিনিউয়ের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। ্যালিতে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের জন্য ট্রাক-পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহনের ব্যবস্থা করা হয়।

বর্ণাঢ্য ্যালিতে অনেক নেতাকর্মীর হাতে শোভা পায় বিএনপির নির্বাচনী প্রতীক ধানের শীষের ছড়া. বিএনপির দলীয় পতাকা, জাতীয় পতাকা। বিভিন্ন পথ ধরে ্যালি যাওয়ার সময়ে রাস্তার দুই পাশে অনেক মানুষ মানুষ করতালি দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিনন্দন জানায়।

এর আগে দুপুরের মধ্যেই ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থানার পাশাপাশি আশপাশের বিভিন্ন জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিলসহকারে নয়াপল্টন এলাকায় জড়ো হন। ঢাকা জেলার বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ কুমিল্লা থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ্যালিতে অংশ নেন। ্যালির জন্য বেশ কিছু সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

বর্ণাঢ্য ্যালিটি নয়াপল্টন  বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে নাইটিংগেল মোড়, কাকরাইল মোড়, কাকরাইল মসজিদ, মৎস্য ভবন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট, শাহবাগ মোড়, বাংলামোটর, কাওরান বাজার ফার্মগেট হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউতে গিয়ে শেষ হয়।

্যালি বিষয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপিকে জাতীয় বিপ্লব সংহতি দিবস পালনে বাধা দেওয়া হতো। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগের পর দীর্ঘ ১৮ বছর পর ব্যাপক আয়োজন বড় পরিসরে জাতীয় বিপ্লব সংহতি দিবস পালন করছে বিএনপি। আর জন্যই দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে বইছে খুশির বন্যা।

্যালির আগে দেওয়া ভার্চুয়ালি বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ১৯৭৫ সালের নভেম্বর ছিল বাংলাদেশের শত্রু-মিত্র চেনার দিন। আর ২০২৪ সালের আগস্ট ছিল বাংলাদেশের শত্রু চিহ্নিত করার দিন। তিনি বলেন, স্বৈরাচারের দোসররা দেশ-বিদেশে এখনো সক্রিয়। তাই  অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, আর কখনো যেন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে না পারে সেজন্য সব নাগরিকের ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার থেকে কেন্দ্রীয় সরকার পর্যন্ত জনপ্রতিনিধি হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জনগণের ভোটের প্রতি যতক্ষণ পর্যন্ত মুখাপেক্ষী করা না যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত জনগণ গণতন্ত্রের সুফল পাবে না। এমনকি স্বৈরাচারমুক্ত পরিবেশেও স্বল্প আয়ের মানুষকে বাজার সিন্ডিকেটের অভিশাপ থেকে মুক্ত করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। যদি মানুষের সরাসরি ভোটের অধিকার আমরা নিশ্চিত করতে না পারি।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে আর কেউ দেশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করতে পারবে না। রাজপথের সমাবেশ, মিছিল, ্যালি কারও বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় তোলার জন্য নয়। বিএনপির আজকের ্যালি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে না, এই ্যালি হলো বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য। নিজেদের অধিকার রক্ষার ্যালি। নিজের ভোট নিজে প্রয়োগের অধিকার প্রতিষ্ঠার ্যালি।

তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রবিরোধী ষড়যন্ত্র এখনো থেমে নেই। জাতীয়তাবাদী শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না। বিএনপির লক্ষ্য জনগণের ভোট নিশ্চিত করা। তবে অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করার চেষ্টা চলছে। তাই সরকারকে সহায়তার মাধ্যমে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, রাজধানী ঢাকার এই রাজপথে লাখো জনতার ্যালি, বাংলাদেশের পক্ষের শক্তিকে নভেম্বরের অন্তর্নিহিত শিক্ষায় দীক্ষিত করার ্যালি। আজকের এই ্যালি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত অসংখ্য মানুষ হাজারো শহীদের স্বপ্নের একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ের মিছিল। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী অপশক্তি জেনে রাখুক রাজধানীর রাজপথের আজকের এই সমাবেশ-মিছিল, নিজেদের অধিকার রক্ষার মিছিল।

তারেক রহমান বলেন, একটি বিষয় স্মরণ করিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানাতে চাই, আমি নিজেও সতর্ক থাকতে চাই। সেটি হলো গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্র এখনো কিন্তু থেমে নেই। পলাতক স্বৈরাচারের দোসররা দেশে-বিদেশে, প্রশাসনে, এখনো সক্রিয়। অন্তর্বর্তী সরকার সফল হোক এটিই আজ জনগণের চাওয়া। তারেক রহমান বলেন, লাখো জনতার এই মিছিলকে কোনোভাবে বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না- এই প্রত্যাশা সাফল্য কামনা করে ্যালির উদ্বোধন ঘোষণা করেন তারেক রহমান।

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক দল বিএনপি। দেশের গণতন্ত্রকে বারবার রক্ষা করেছে বিএনপি। আওয়ামী দুঃশাসনে বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী গুম, খুন হয়েছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা পালিয়েছেন, কিন্তু আওয়ামী দোসররা বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তার মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। দেশে গণতন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু চলবে না।

ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা পালালেও তার দোসররা ঘাঁপটি মেরে আছে। সুযোগ পেলে তারা আবার হামলা করবে। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের মোকাবিলা করার আহ্বান জানাচ্ছি।

ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের সব রাজনৈতিক কাঠামো ধ্বংস করেছে। শেখ হাসিনা তার সহকর্মীদের নিয়ে লুটপাট করেছেন। এই ১৭ বছরে অনেক মানুষ জীবন দিয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ কারাবরণ করেছেন। বিএনপির ৬০ হাজার নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে তাদের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেব।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের মানুষ তাদের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের ব্যাপারে আপোসহীন থাকবেন। আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বলি, এখানে গণতন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু চলবে না। আবার স্বৈরাচার ফিরে এলে দেশের মানুষ প্রতিহত করবে।

ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে করেছিল একটি মাফিয়া রাষ্ট্র। তারা তাদের সহযোগীদের সহযোগিতায় দেশের অর্থনীতি ফোকলা করে দিয়েছে। তিনি বলেন, আজকের ্যালি প্রমাণ করবে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। তিনি বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ধ্বংস করতে আসবে, অত্যন্ত সজাগ সচেতন থেকে তাদের যে কোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। এখানে গণতন্ত্র ছাড়া ফ্যাসিবাদ সুযোগ পাবে না। আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করব।

্যালিতে নেতৃত্ব দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, . আব্দুল মঈন খান, ডা. জেড এম জাহিদ হোসেন, দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আহমেদ আজম খান, মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, দলের স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু. প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, দলের কেন্দ্রীয় নেতা রশিদুজ্জামান মিল্লাহ, নাসির উদ্দিন অসীম, শিরিন সুলতানা, মীর নেওয়াজ আলী, রফিকুল ইসলাম, সাইফুল আলম নীরব, রাকিবুল ইসলাম বকুল, নিলোফার চৌধুরী মনি, তাইফুল ইসলাম টিপু, নিপুণ রায় চৌধুরী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, যুবদল সভাপতি এম মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, কৃষকদল সভাপতি হাসান জাফির তুহিন প্রমুখ।

জেনেভায় আসিফ নজরুলকে হেনস্তার নিন্দা তারেক রহমানের সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিমানবন্দরে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক . আসিফ নজরুলকে হেনস্তার ঘটনায় নিন্দা প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি নিন্দা প্রতিবাদ জানান।

তারেক রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ফ্র্যান্সে যাওয়ার পথে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিমানবন্দরের সামনে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা . আসিফ নজরুলের সঙ্গে কতিপয় আওয়ামী দুষ্কৃতকারী উদ্ধত আচরণ করেন। বিদেশের মাটিতে নিজ দেশের সরকারের একজন উপদেষ্টার সঙ্গে এমন শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ শুধু অনভিপ্রেতই নয় বরং দেশ জনগণের আত্মমর্যাদার ওপর প্রচণ্ড আঘাত। ফ্যাসিবাদের হিংস্র রূপের প্রকাশ এখনো দেশে-বিদেশে অনেক স্থানে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। প্রবাসে আওয়ামী নেতাকর্মীরাও শেখ হাসিনার অবয়ব ধারণ করে সুযোগ পেলেই গণতান্ত্রিক শক্তির ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে।

তারেক রহমান বলেন, আইন উপদেষ্টার সঙ্গে তাদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণে আবারও প্রমাণিত হলো এরা বিশৃঙ্খলা, হানাহানি, বিভাজন, সংকীর্ণ, অনৈক্য, রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির হরিলুট এবং বিপুল অঙ্কের টাকা পাচারসহ অসৎ অনাচারের মাধ্যমে কর্তৃত্ববাদী শেখ হাসিনার হত্যা গুমের রাজনীতির বিশ্বাস থেকে সরে আসেনি। এরা গণতন্ত্র স্বীকৃত মানবাধিকার, আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা জনগণের নাগরিক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নয়। গণতন্ত্রের সঙ্গে শত্রুতা আওয়ামী লীগের চিরদিনের বৈশিষ্ট্য। রক্তাক্ত পন্থায় ছাত্র-জনতার আন্দোলন পরাজিত করতে না পেরে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ায় শেখ হাসিনার ক্রোধ যেমন থামছে না, তেমনি দেশে-বিদেশে তার সমর্থকরাও প্রচণ্ড হতাশা নিয়ে সুযোগ পেলেই গণতন্ত্রকামী মানুষ হত্যা করছে বা শারীরিকভাবে আঘাতসহ নানাভাবে হয়রানির কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। জেনেভা বিমানবন্দরের সামনে . আসিফ নজরুলের সঙ্গে অশোভন আচরণ শেখ হাসিনার তৈরি করা সেই দুঃশাসনেরই অভিব্যক্তি।

তারেক রহমান বলেন, শেখ হাসিনা দেশের রাজনীতিকে জটিল করে তুলতে বাইরে থেকে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামী লুটপাটের সুবিধাভোগীরা বিদেশে গভীর চক্রান্তে মেতে উঠেছে। গণতন্ত্রের স্বপক্ষের ব্যক্তিবর্গকে হেনস্তা করাসহ বাংলাদেশের ভেতরেও অন্তর্ঘাত সৃষ্টির গভীর চক্রান্তজাল বুনে যাচ্ছে। লুটপাটের স্বর্গরাজ্য পুনরুদ্ধারের জন্য উদগ্রীব ফ্যাসিবাদের দোসররা দেশে-বিদেশে নানা এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছে। আওয়ামী লীগ বরাবরই ক্ষমতার নেশায় আচ্ছন্ন অপরাধপ্রবণ রাজনৈতিক দল। ক্ষমতা হারানোর মনোবেদনায় এরা দিশাহারা হয়ে পড়েছে। এরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিশ্বাস করে না বলেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেছে নেয়।

তারেক রহমান বলেন, আত্মপ্রত্যয়হীন, যুক্তিবিমুখ, মানবতাবিরোধী আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী দোসরদের চিহ্নিত করে রাখতে হবে। এদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বিদেশে গণতন্ত্রকামী প্রবাসী বাংলাদেশীরা ফ্যাসিবাদী দোসরদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের আইন বিচার বিভাগকে অবহিত করতে হবে। বাংলাদেশে আওয়ামী দৈত্যকে জনগণই বোতলবন্দি করেছে। আন্তর্জাতিক পরিসরে এই সমস্ত আওয়ামী কুচক্রীদের বিচারের আওতার মধ্যে আনতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আমি আইন উপদেষ্টা . আসিফ নজরুলের ওপর আওয়ামী লীগের দোসরদের অসৌজন্যমূলক আচরণের নিন্দা প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

×