ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান আর নেই

কূটনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৩২, ৩০ নভেম্বর ২০২৩

সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান আর নেই

ওয়ালিউর রহমান

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান আর নেই। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি... রাজিউন)। বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। হেরিটেজ ফাউন্ডেশন এক বার্তায় জানায়, মুক্তিযোদ্ধা ও রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ওয়ালিউর রহমানের নামাজে জানাজা বুধবার বাদ মাগরিব বিকেল সাড়ে ৫টায় ধানম-ি ৭ নম্বর রোড সংলগ্ন বায়তুল আমান মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। 
ওয়ালিউর রহমান ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপার কাঁচেরকোল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৭ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত হিসেবে দেখা করেন কিংবদন্তি নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে। এ সময় নেলসন ম্যান্ডেলাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী উপলক্ষে আমন্ত্রণ জানান তিনি।
ওয়ালিউর রহমান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানের ফরেন সার্ভিসের চাকরি ছেড়ে মুজিবনগর সরকারে যোগদান করেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ও নেতৃত্বে তিনি বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সদস্যপদ অর্জন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের পর তিনি জিয়াউর রহমানের রোষানলে পড়েন এবং এক পর্যায়ে তাকে ওএসডি করা হয়। প্রধান কারণ দেখানো হয় তিনি বঙ্গবন্ধু নৃশংস হত্যাকা-ের প্রতিবাদে ১৯৭৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১৩ এবং ১৭ তারিখে বিলিয়ায় দুইটি সেমিনারের আয়োজন করেন। জেনারেলদের রাজনীতি এবং রাজনৈতিক হত্যাকা- শীর্ষক ওই সেমিনারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান তখন বিলিয়ার আজীবন সদস্য। এ সময় বিলিয়ার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত কামরুদ্দিন আহমেদ।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ওয়ালিউর রহমান ছিলেন ৭নং হেলভেশিয়া প্লাসে। সুইস পার্লামেন্টের সামনে হাজার হাজার সুইস নাগরিক সমবেত হয়ে একটি সমাবেশ করেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে। 
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করছেন। ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও প্রসিকিউটররা ওয়ালিউর রহমানের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
এক শোক বার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারের নৃশংসভাবে হত্যার পর ওয়ালিউর রহমান এই ঘৃণ্য ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সাহসিকতার স্বাক্ষর রাখেন। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ফিরিয়ে আনার বিষয়েও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মোমেন বলেন, রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমানের মৃত্যুতে দেশ ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হল। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোক সন্তুপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

×