কোরবানির পশু হটে নেয় হচ্ছে
কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় সারাদেশে গবাদিপশু বেচাকেনার প্রস্তুতি চলছে। ঈদ-উল-আজহা উদ্যাপনে কোরবানির প্রধান অনুষঙ্গ গরু-ছাগল বিক্রির লক্ষ্যে সারাদেশের পশুর হাটগুলোও এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে ঢাকার ১৮টি অস্থায়ী পশুর হাটের। বেপারি ও মহাজনরা দেশের স্থানীয় হাট ও খামারগুলো থেকে পশু কিনে সেগুলো নিয়ে এখন ঢাকার পথে রয়েছেন। আগামী ৬ জুলাই বুধবার থেকে ঢাকার দুটি স্থায়ী হাটসহ আরও ১৮টি অস্থায়ী স্থান বা হাটে পশু বেচাকেনা শুরু হবে। ক্রেতারাও কোরবানি দিতে পছন্দের পশুটি কিনতে মুখিয়ে আছেন। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের একুশ জেলা থেকে ট্রলারের বিপরীতে ট্রাক ও লরিতে প্রথমবারের মতো পদ্মা সেতু পার হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করবে গবাদিপশু। এ কারণে দ্রুত পশুবাহী ট্রাকগুলো ঢাকায় আসার সুযোগ তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে, দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে কোরবানির পশু পরিবহনে ‘ক্যাটল স্পেশাল’ নামে বিশেষ ট্রেন চালু করবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ব্যবসায়ী ও খামারিদের ভোগান্তি এবং পরিবহন খরচ কমাতে গবাদিপশু ঢাকায় পৌঁছে দেবে এই বিশেষ ট্রেন। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় কোরবানির হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর জোর দিয়েছে সরকার। এ বছর কোরবানির জন্য গরু, ছাগল, ভেড়া, উট মিলিয়ে এক কোটি ২১ লাখ ২ হাজার ৩৮৯টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। চাহিদার তুলনায় দেশে এবার কোরবানিযোগ্য প্রায় ২৩ লাখ গবাদিপশু বেশি রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিফতর। এতে করে গবাদিপশুর সঙ্কটের কোন আশঙ্কা নেই বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা গেছে, কোরবানির পশু যাতে ঘরে বসেই কেনাকাটা করা যায়, সে জন্য এবার ডিজিটাল হাটের বাজার সম্প্রসারণ করার উদ্যোগ নিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। এ ক্ষেত্রে প্রতারণারোধে অর্থ বা টাকা-পয়সা লেনদেনের বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গ্রাহক ক্রয়কৃত পশুটি বুঝে পাওয়ার পর সন্তোষ্টিসূচক সম্মতি দেয়ার পরই কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনলাইন প্ল্যাটফর্মের অনুকূলে টাকা হস্তান্তর করবে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট সময় এবং স্ক্রিনে দেখানো পশুটি গ্রাহক পেয়েছে কি না- সে বিষয়গুলো কঠোরভাবে মনিটরিং করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ভোক্তাদের সতর্ক থাকার বিষয়ে জোর দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কোন অভিযোগ থাকলে সঙ্গে সঙ্গে তা জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতরের নজরে আনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোরবানির গবাদিপশু নিয়ে প্রতিবছর ঢাকায় অসাধু সিন্ডিকেট চক্র গড়ে ওঠে। এরা বিভিন্ন অপকৌশলে বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি, জোরপূর্বক নির্দিষ্ট হাটে পশু নিয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত হাসিল আদায়, বাজারে জাল টাকার ব্যবহার ও চাঁদাবাজির মতো ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। এসব বিষয় তদারকিতে এবার প্রাণিসম্পদ অধিফতর একটি কন্ট্রোল রুম খোলার উদ্যোগ নিয়েছে। কোরবানির গবাদিপশু বিষয়ে যে কোন অভিযোগ ও সমস্যার তাৎক্ষণিক প্রতিকার পাওয়া যাবে এই কন্ট্রোল রুম থেকে। এদিকে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ঢাকার দুই স্থায়ী হাট গাবতলী ও সারুলিয়া হাটে কোরবানির গবাদিপশু আসা শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা বিশেষ করে পাবনা, সিরাজগঞ্জ এবং কুষ্টিয়া থেকে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ নিয়ে আসা হচ্ছে হাটে। তবে এখনও বেচাবিক্রি শুরু হয়নি। বেপারিরা দেশের বিভিন্ন হাট এবং খামারগুলো থেকে এসব পশু সংগ্রহ করে ঢাকায় আনছেন। ঢাকার অস্থায়ী হাটে পশু বেচাকেনা শুরু হবে আগামী ৬ জুলাই থেকে। এ কারণে হাটগুলো এখন পূর্ণ প্রস্তুতিতে রয়েছে। বিশেষ করে গরু-ছাগল বাঁধার জন্য বাঁশ পোঁতা, সামিয়ানা টানানো, পশুর খাবার খড়, ভুসি সংগ্রহ করা, সামিয়ানা টানানো, সিসি টিভি লাগানো, হাসিল আদায়ের ঘর নির্মাণ, মাইক লাগানো এবং স্বাস্থ্যবিধির সতর্কতা জানাতে ব্যানার ও লিফলেট লাগানোর কাজ শেষ করে আনা হয়েছে।
আজ সোমবার থেকেই অস্থায়ী হাটগুলোতে পশু আসা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, এবার উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসানো হচ্ছে ৮টি অস্থায়ী পশুর হাট। অন্যদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসতে যাচ্ছে ১০টি অস্থায়ী পশুর হাট। রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় যে দুটি স্থায়ী হাট রয়েছে, সেগুলোতে বছরজুড়েই পশু কেনাবেচা চলে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতায় স্থায়ী হাটটি হলো গাবতলী হাট, আর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতায় স্থায়ী হাট হলো সারুলিয়া স্থায়ী হাট। অন্যদিকে, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন মিলিয়ে গত বছর মোট ২৩টি হাট বসেছিল রাজধানীতে। এ বছর হাটের সংখ্যা কমিয়ে ১৮টিতে আনা হয়েছে। আগামী বছর থেকে এ সংখ্যা আরও কমতে পারে। করোনার কারণে ২০২০ সালে প্রথম অনলাইন হাটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়, তবে এর আগেও ব্যক্তি বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো অল্প সংখ্যক পশু অনলাইনে বিক্রির ট্রেন্ড চালু করেছিল। এরপর থেকে বিকাশ ঘটতে থাকে অললাইন হাটের। ২০২০ সালের মতো ২০২১ সালেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে এবং ডিএনসিসির তত্ত্বাবধানে ই-ক্যাব ও বিডিএফ অনলাইন হাট পরিচালনা করেছে। গত বছর ডিজিটাল হাট প্ল্যাটফর্মে এক হাজার ৮৪৩টি হাট অনলাইনে যুক্ত হয়। এ বছর এই লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। গত বছর ডিজিটাল হাট থকে মোট পশু বিক্রি হয় ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৫শ’ ৭৯টি। এগুলোর মধ্যে গরু ও মহিষ ২ লাখ ৯৬ হাজার ৭ শ’ ১০টি, যার মোট মূল্য ২ হাজার ৭শ’ ৩৫ কোটি ১১ লাখ ১৫ হাজার ৬শ’ ৭৮ টাকা।
ডিজিটাল হাটে পশু বেচাকেনার টাকা থাকবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ॥ ডিজিটাল পশুহাটে গ্রাহকের আর্থিক নিরাপত্তা জোরদারে কেনাবেচার টাকা জমা থাকবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। অর্থাৎ কোরবানির পশুটি হাতে পাওয়ার পর গ্রাহক অনলাইনে সন্তোষ্টিসূচক মন্তব্য করার পরই কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ছাড় করবে। এর আগে টাকা পাবে না অনলাইনের ডিজিটাল পশুহাট। এ কারণে ডিজিটাল হাটে পশু ক্রয়-বিক্রয়ের নিয়ম ঠিক করে দেয়া হবে। এতে পশু বিক্রির কি কি নিয়ম মানতে হবে, কি কি তথ্য থাকতে হবে- তা উল্লেখ করে দেয়া হবে। এ ছাড়া গ্রাহককে সময়মতো কোরবানির পশু দিতে না পারলে, সে সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসকদের অনুমোদিত বিক্রেতারা তাদের পশু বিক্রি করতে পারবে। ক্রেতার আর্থিক নিরাপত্তা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তার সাময়িক স্ক্রোসেবা ব্যবহার করা হবে। এটার মাধ্যমে যিনি গরুটা কিনবেন, সেই টাকা তাৎক্ষণিক বিক্রেতা পাবেন না। এটা চলে যাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি এ্যাকাউন্টে। যখন ক্রেতা কনফার্ম করবেন, গরুটা তিনি পেয়েছেন এবং কোন অভিযোগ নেই, তখনই গরুর বিক্রেতা তার টাকা পাবেন। এ প্রসঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম সম্প্রতি জানান, এবারের ঈদ-উল-আজহায় কোরবানির জন্য অনলাইন থেকে কেনা পশু পছন্দ না হলে টাকা ফেরতের ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। এ ছাড়া নগদ টাকার বদলে খামারিরা যাতে স্মার্ট পদ্ধতিতে আর্থিক লেনদেন করতে পারেন, সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া ঈদ-উল-আজহা উদ্যাপন নিরাপদ করতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। হাটগুলোতে হাত ধোয়া ও স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। পাশাপাশি নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে হাট পরিচালিত হবে।
ঢাকার অস্থায়ী ১৮ হাট প্রস্তুত ॥ ঢাকার অস্থায়ী ১৮ পশুর হাট এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আগামী বুধবার থেকে এসব হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা শুরু হবে। এ বছর অস্থায়ী ৮টি হাট বসানোর জন্য দরপত্র আহ্বান করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। উত্তর সিটির যে ৮ স্থানে বসবে অস্থায়ী হাট- কাওলা শিয়ালডাঙ্গা, উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ এর খালি জায়গা, ভাটারা (সাইদ নগর), বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং, আফতাবনগর ব্লক-ই থেকে এইচ পর্যন্ত এলাকা, মোহাম্মদপুর বছিলার ৪০ ফুট রাস্তা সংলগ্ন খালি জায়গা, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৩০০ ফুট সড়ক সংলগ্ন খালি জায়গা, মিরপুর সেকশন-৬ এর খালি জায়গা এবং ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁচপুরা বেপারি পাড়ার রহমান নগর আবাসিক প্রকল্প এলাকায় অস্থায়ী এই ৮টি হাট বসবে। এ ছাড়া মহাখালী টিএ্যান্ডটি মোড় খেলার মাঠ এবং তেজগাঁও পলিটেকনিক্যাল মাঠসহ আশপাশের খালি জায়গায় পৃথক দুটি হাট বসানোর জন্য আবেদন জানিয়েছেন কাউন্সিলররা। এ প্রসঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মাহে আলম জানান, আগামী ৬ জুলাই থেকে হাটগুলোতে পশু বেচাকেনা শুরু হবে। এবার ইজারা প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং সর্বোচ্চ দরদাতাকেই হাটের ইজারা দেয়া হয়েছে। এ বছর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসবে ১০টি অস্থায়ী হাট। দক্ষিণ সিটির যে ১০ স্থানে বসবে অস্থায়ী হাট- খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী ক্লাব সংঘ মাঠ, হাজারীবাগ ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজ মাঠ, পোস্তাগোলা শ্মশানঘাটসহ আশপাশের খালি জায়গা, মেরাদিয়া বাজার সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব সংলগ্ন খালি জায়গাসহ কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকা, যাত্রাবাড়ী দনিয়া কলেজ সংলগ্ন আশপাশের এলাকা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, লালবাগ রহমতগঞ্জ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, শ্যামপুর কদমতলী ট্রাকস্ট্যান্ড সংলগ্ন খালি জায়গা এবং আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গায় এবার ডিএসসিসির নির্ধারিত অস্থায়ী হাটগুলো বসবে। এই হাটগুলোর মধ্যে সবগুলোর ইজারা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়ে গেছে। যারা হাটগুলো ইজারা পেয়েছেন তারা হাটে বাঁশ, সামিয়ানা, হাসিল প্যান্ডেল, গরু রাখার স্থান নির্মাণের কাজ শেষ করে এনেছেন।
হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে ॥ করোনার প্রকোপ ফের বেড়ে যাওয়ার কারণে হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতারা মাস্ক, স্যানিটাইজার ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশু কেনাবেচা করবেন। এ ছাড়া কোরবানির পশুর বর্জ্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ এবং কোরবানির স্থান পরিষ্কার করার জন্য সব সিটি কর্পোরেশন এবং সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কোরবানির পশুর হাট বসানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, পশুরহাট, বাজার ব্যবস্থাপনা, দ্রুততম সময়ে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের জন্য জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও জনসাধারণকে পাশে দাঁড়াতে হবে। সড়ক-মহাসড়কের পাশে যেখানে যান চলাচল বিঘ্ন হতে পারে, সেখানে কোনভাবেই পশুর হাট বসানো যাবে না। এ নির্দেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চাহিদার তুলনায় গবাদিপশু বেশি আছে, প্রাণিসম্পদ অধিদফতর দাবি ॥ চাহিদার তুলনায় এবার দেশে কোরবানিযোগ্য ২৩ লাখ গবাদিপশু বেশি আছে বলে দাবি করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের হিসাব তুলে ধরে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন। মন্ত্রী দাবি করেন, কোরবানিতে দেশে পশু সঙ্কটের কোন আশঙ্কা নেই। এ কারণে যারা কোরবানি দেবেন তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। হাটে গিয়ে তারা পছন্দের পশুটি কিনতে পারবেন। এর আগে গত ২৩ জুন কোরবানির হাটের বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় কোরবানির পশুর চহিদা, সরবরাহসহ সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা হয়। সেখানে জানানো হয়, এ বছর কোরবানির জন্য গরু, ছাগল, ভেড়া, উট মিলিয়ে এক কোটি ২১ লাখ ২ হাজার ৩৮৯টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া গতবারের মতো বেসরকারী উদ্যোক্তার পাশাপাশি সরকারীভাবে অনলাইন হাটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সংস্থাটির মতে, গত বছর কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ছিল এক কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টি। এর মধ্যে কোরবানি হয় ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি পশু। অর্থাৎ গত কয়েক বছর ধরেই দেশে চাহিদার তুলনায় বেশি গবাদিপশু উৎপাদন হচ্ছে। খামার মালিকরাও দাবি করেছেন দেশীয় পশুতে কোরবানি হবে, সঙ্কট হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই। আমদানি নিরুৎসাহিত করার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স এ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- এটা হলে খামারিরা লোকসানে পড়বেন। তবে, গত কয়েক বছর ধরে কোরবানির আগে ঢাকায় শেষ পর্যন্ত গরু ও ছাগল নিয়ে কাড়াকাড়ি হয়ে থাকে। ক্রেতারা বেশি দাম দিয়েও পছন্দের পশুটি কিনতে পারেন না। এ ধরনের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কারণে কোরবানির হাটে বিশৃঙ্খলা হয়ে থাকে। কৃত্রিম সঙ্কটরোধে এদের আগে নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।