ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২

চাপের প্রভাব শুধু মনে নয়, পেটেও! জেনে নিন গাট-ব্রেইন সম্পর্কিত ৫টি বিষয়

প্রকাশিত: ১১:৫১, ২৪ জুন ২০২৫; আপডেট: ১১:৫২, ২৪ জুন ২০২৫

চাপের প্রভাব শুধু মনে নয়, পেটেও! জেনে নিন গাট-ব্রেইন সম্পর্কিত ৫টি বিষয়

ছবি: সংগৃহীত

 

চাপ বা স্ট্রেস মানসিক স্বাস্থ্যকে যেমন প্রভাবিত করে, তেমনি শরীরের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম—বিশেষত হজমতন্ত্রেও গভীর ছাপ ফেলে। গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডা. ভবেশ প্যাটেল জানিয়েছেন, এই সংযোগকে বলা হয় গাট-ব্রেইন অ্যাক্সিস, যেখানে মস্তিষ্কের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করে অন্ত্র।

 

কীভাবে মানসিক চাপ গাটে প্রভাব ফেলে?

মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বিভিন্ন হরমোন ও নিউরোট্রান্সমিটার যেমন: হিস্টামিন, সেরোটোনিন এবং কর্টিসল নিঃসরণ করে, যা গাটের গতি, সংবেদনশীলতা, ব্যাকটেরিয়া ব্যালান্স এবং পেটের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কাজকর্মে বড়সড় প্রভাব ফেলে।

এই কারণে অনেকেই পরীক্ষার আগে, চাকরির ইন্টারভিউ বা বড় কোনো উপস্থাপনার আগে বারবার বাথরুমে যান বা পেট ব্যথা অনুভব করেন—এটা কেবল নার্ভাসনেস নয়, একটি জৈবিক প্রতিক্রিয়া।

 

Disorder of Gut-Brain Interaction (DGBI) কী?

আগে যেটিকে “Functional GI Disorders” বলা হতো, এখন সেটির আধুনিক নাম Disorder of Gut-Brain Interaction (DGBI)। এই ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে:

  • Irritable Bowel Syndrome (IBS) – পেট ব্যথা, ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া
  • Functional Dyspepsia (FD) – উপরের পেটে ব্যথা, অল্প খেলেই ভরা লাগা
  • Functional Constipation – নিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্য, কাঠামোগত কোনো কারণ ছাড়াই
  • Functional Diarrhoea – দীর্ঘমেয়াদি পাতলা পায়খানা, সংক্রমণ ছাড়াই
  • GERD (গ্যাস্ট্রো-ইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স) – অ্যাসিড রিফ্লাক্স, বুকজ্বালা, বুকে ব্যথা

 

DGBI-এর সাধারণ উপসর্গ:

  • পেটে ব্যথা ও ফাঁপা
  • ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য
  • ঢেঁকুর
  • বমি
  • গ্যাসের সমস্যা

 

অন্যান্য ঝুঁকি:

স্ট্রেস ছাড়াও যেসব কারণে গাট সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে:

  • পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া
  • অনিয়মিত ও অপুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস
  • ধূমপান
  • অ্যালকোহল ও তামাক সেবন

 

কীভাবে স্ট্রেস কমিয়ে গাট সুস্থ রাখা যায়?

  • স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট – মেডিটেশন, যোগব্যায়াম, মাইন্ডফুলনেস ও শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম
  • খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন – ট্রিগার খাবার চিহ্নিত ও এড়িয়ে চলা, পর্যাপ্ত পানি পান, লো-FODMAP ডায়েট
  • প্রয়োজনে ওষুধ সেবন – উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শে ল্যাক্সেটিভ বা অ্যান্টি-ডায়রিয়াল
  • জীবনযাত্রায় পরিবর্তন – নিয়মিত ঘুম, ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন, ব্যায়াম

 

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি?

নিচের লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে:

  • ঘন ঘন বমি
  • হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া
  • ক্ষুধামান্দ্য
  • রক্তশূন্যতা (অ্যানিমিয়া)
  • জন্ডিস

আঁখি

×