
পূর্ব বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে খুন করে লাশ ডোবায় ফেলে দিয়েছিল খুনিরা। অভিযুক্তদের মধ্যে ২ জনের পরিচয় জানা গেলেও বাকিরা ছিল অজ্ঞাত। সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিটের তৎপরতায় বেরিয়ে আসে অজ্ঞাতনামা খুনির পরিচয়। এরপর এলআইসি শাখার পরিশীলিত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে সনাক্ত হয় অবস্থান, আর সিআইডির জালে ধরা পড়ে অজ্ঞাতনামা এই খুনি।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম মো. সেলিম মাদবর ওরফে রফিক (৪৯); পিতা–মৃত মো. আলী মাদবর, মাতা–রিজিয়া বেগম, গ্রাম–ঘটখালী (চাওড়া), থানা–আমতলী, জেলা–বরগুনা।
গত ২৩ জুন সিআইডির এলআইসি শাখার একটি চৌকস টিম ডিএমপির ডেমরা থানাধীন সারুলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, টোল উত্তোলন নিয়ে বিরোধের জেরে গত ২৪/০২/২০২৪ খ্রিঃ রাত আনুমানিক ০৭:৫০ মিনিটে ঝালকাঠি জেলার নলছিটি পৌরসভার নান্দিকাঠি গ্রামে লাইফকেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে আনুমানিক ২০০ গজ পূর্বে পাকা রাস্তার উপর ভিকটিম ইমরান হাওলাদার (৩২)-কে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে লাশ পার্শ্ববর্তী কচুরিপানা ভর্তি ডোবার পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। একই ঘটনায় ইমরানের স্ত্রী ফাহিমা বেগম গুরুতর আহত হন।
পরবর্তীতে নিহত ইমরানের পিতা আব্দুর রশিদ হাওলাদার বাদী হয়ে ২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৮-১০ জনকে অভিযুক্ত করে নলছিটি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার পরপরই সিআইডির ক্রাইমসিন টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন আলামত জব্দ করে। জব্দকৃত আলামত পরীক্ষার নিমিত্তে ডিএনএ ল্যাব, সিআইডি সদর দপ্তর, ঢাকায় প্রেরণ করা হলে ডিএনএ বিশেষজ্ঞগণ ঘটনাস্থলে প্রাপ্ত আলামতসমূহ পরীক্ষা করে অজ্ঞাতনামা একজনের ডিএনএ’র অস্তিত্ব পান। ডিএনএ প্রোফাইল ম্যাচিং-এর মাধ্যমে জানা যায় তার নাম মো. সেলিম মাদবর রফিক (৪৯)। তাকে গ্রেফতার করতে সিআইডির এলআইসি শাখা বিভিন্নভাবে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় অভিযুক্তর অবস্থান সনাক্ত করে এলআইসি শাখার একটি চৌকস টিম ডিএমপি’র ডেমরা থানাধীন সারুলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত অভিযুক্ত মো. সেলিম মাদবর রফিক (৪৯)-কে গ্রেফতার করে।
নথিপত্র পর্যালোচনায় জানা যায়, তার বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ০২টি ডাকাতি মামলা রয়েছে। এছাড়াও বাড্ডা থানার মামলা নং–২৪, তারিখ–১০/১১/২০২০ খ্রি., ধারা–৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড-এ মো. সেলিম মাদবর রফিক (৪৯)-এর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
অন্যদিকে, এজাহারনামীয় ০১ নং অভিযুক্ত আল-আমিন হাওলাদার বিজ্ঞ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে ডিএনএ বিশেষজ্ঞগণ অভিযুক্তের ডিএনএ প্রোফাইল প্রস্তুত করেন এবং পরীক্ষান্তে ঘটনাস্থলে প্রাপ্ত আলামতের সাথে অভিযুক্ত আল-আমিন হাওলাদারের ডিএনএ ম্যাচিং পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত মো. সেলিম মাদবর @ রফিক (৪৯)-কে যথানিয়মে তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। সিআইডির এলআইসি শাখা বিভিন্নভাবে তথ্য বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণে সর্বোচ্চ পারঙ্গমতা অর্জনে বদ্ধপরিকর এবং এর মাধ্যমে অপরাধ সংঘটনের অবস্থান ও অপরাধী সনাক্ত করে গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সানজানা