ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যেভাবে ধৈর্যই বদলে দিতে পারে আপনার জীবন!গবেষকের বর্ণনা

প্রকাশিত: ১৩:১৮, ১৯ মে ২০২৫

যেভাবে ধৈর্যই বদলে দিতে পারে আপনার জীবন!গবেষকের বর্ণনা

অধ্যাপক স্যাম গোল্ডস্টাইন তার সাম্প্রতিক প্রবন্ধে ধৈর্যের গুরুত্ব ও তার ফলাফল নিয়ে গভীর ভাবনা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টা কখনোই অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়, কারণ তা জীবনে অনাকাঙ্ক্ষিত, অথচ অর্থবহ সাফল্যের দ্বার খুলে দিতে পারে।

স্যাম গোল্ডস্টাইন, যিনি ইউনিভার্সিটি অব ইউটাহ স্কুল অব মেডিসিনের অ্যাডজাঙ্ক্ট ফ্যাকাল্টি সদস্য এবং শিশুদের মধ্যে ‘টেনাসিটি’ বা জেদ-অটলতা নিয়ে লেখা বইয়ের সহ-লেখক, তার প্রবন্ধে একটি ব্যক্তিগত গল্পের মাধ্যমে এই বিষয়টি তুলে ধরেন।

একজন বন্ধুর দেওয়া একটি অর্কিড গাছের মাধ্যমে তিনি ধৈর্যের শক্তি ও ফলাফলের উদাহরণ দেন। তিনি বর্ণনা করেন, কিভাবে প্রথম কয়েক বছর ওই অর্কিড গাছ থেকে ফুল ঝড়ে পড়ার পর অনেকেই সেটি ফেলে দেয়, কারণ গাছটি তখন দেখতে একেবারে মৃতপ্রায় মনে হয়। কিন্তু গোল্ডস্টাইন তা ফেলে না দিয়ে, নিয়মিত সপ্তাহে একবার পানি দিয়ে যত্ন নেন। ধীরে ধীরে গাছটি অদৃশ্যভাবে বেড়ে ওঠে, তৃতীয় বছরে নতুন কাণ্ড ও ফুল ফুটতে শুরু করে।

স্যাম গোল্ডস্টাইন বিশ্বাস করেন, এই ছোট্ট অর্কিড গাছটি আমাদের শেখায় ধৈর্যের আসল অর্থ—অপ্রত্যাশিত সাফল্য, যা সময় নিয়ে ধীরে ধীরে আসে। তিনি বলেন, “আমরা আজকের দ্রুতগতির বিশ্বে ধীরগতিকে অনেক সময় তুচ্ছ করি, কিন্তু প্রকৃত বড় পরিবর্তন ধীরে ধীরে, মাটির নিচে অদৃশ্যভাবে হয়।”

তিনি আরো যোগ করেন, দ্রুত ফলাফল প্রত্যাশার এই যুগে মানুষেরা সহসা হাল ছাড়তে চাই, যা দীর্ঘমেয়াদী সফলতার পথে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। গোল্ডস্টাইনের ভাষায়, “পরিচ্ছন্ন ফলাফলের জন্য ধৈর্য ও ধারাবাহিকতা অত্যন্ত জরুরি। শুধুমাত্র ধৈর্যের মাধ্যমেই স্থায়ী সম্পর্ক, দক্ষতা ও সাফল্য গড়ে ওঠে।”

প্রবন্ধে তিনি বিশেষ করে জোর দিয়েছেন যে, ধৈর্য শুধুমাত্র ইচ্ছাশক্তি নয়, বরং একটি বিশ্বাস—বিশ্বাস যে উন্নতি মাটির নিচে হচ্ছে, বিশ্বাস যে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়াকে স্থবিরতা হিসেবে দেখা উচিত নয়, এবং বিশ্বাস যে একসময় সেই প্রচেষ্টা থেকে সুন্দর কিছু জন্ম নেবে।

স্যাম গোল্ডস্টাইনের এই প্রবন্ধ আমাদের জীবনে ধৈর্যের মাহাত্ম্য বুঝতে সাহায্য করে। তিনি আমাদের অনুপ্রাণিত করেন দ্রুতগতির এই বিশ্বে একটু ধীরে চলতে, অপেক্ষা করতে এবং সঠিক সময়ে ফলাফল দেখার জন্য বিশ্বাস রাখার জন্য।

অবশেষে, প্রবন্ধটির মূল শিক্ষা হলো, জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান আনন্দ আসে তখনই, যখন আমরা হাল না ছেড়ে ধৈর্যের সঙ্গে এগিয়ে যাই এবং সময়ের স্রোতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।

 

 

সূত্র:https://tinyurl.com/2sj43yrs

আফরোজা

×