
আপনি যা পড়ছেন, সেটাই কি সত্যি? নাকি চোখ আপনাকে বলছে অন্য কিছু? এক ভাইরাল অপটিক্যাল ইলিউশনে গোটা দুনিয়ার মানুষ এখন বিভ্রান্ত! শব্দের অর্থ ভুলে গিয়ে কেবল রঙ দেখে সঠিক উত্তর দিতে পারছেন মাত্র ২০ শতাংশ। চ্যালেঞ্জটি যতটা সহজ মনে হয়, বাস্তবে তা ততটাই কঠিন এবং একদম আপনার চোখ ও মস্তিষ্কের টানাপোড়েনের পরীক্ষা। ভাবছেন আপনি পারবেন? একবার চেষ্টা করেই দেখুন!
শুনতে সহজ মনে হলেও, কাজটা বেশ গোলমেলে। ছবিটিতে লেখা থাকবে “Blue”, “Red”, “Green” ইত্যাদি, কিন্তু সেগুলো লেখা থাকবে ভিন্ন রঙে। যেমন, "Red" শব্দটা হয়তো লেখা থাকবে সবুজ রঙে। তখন আপনাকে বলতে হবে “সবুজ” না যে শব্দটা “লাল” লেখা আছে, বরং যেটা আপনি চোখে দেখছেন।
এই বিভ্রান্তিকর খেলা বিজ্ঞানের এক পরিচিত মানসিক প্রতিক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে তৈরি।যার নাম Stroop Effect। যখন লেখা এবং রঙ একসঙ্গে মেলে না, তখন মস্তিষ্ক দ্বিধায় পড়ে। আমাদের মস্তিষ্ক শব্দ পড়তে চায়, কিন্তু চোখ চায় রঙ চিনতে। এই টানাপোড়েনেই ঘটে বিভ্রান্তি।
গবেষণা বলছে, মাত্র ২০ শতাংশ মানুষই পুরো তালিকাটি কোনো ভুল না করে শেষ করতে পারেন। কারণ, পড়া আমাদের জন্য একটি স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া। চোখ “Blue” দেখলেও, মস্তিষ্ক শব্দটি পড়ে ফেলে এবং তখন সঠিক রঙ বলা কঠিন হয়ে যায়।
শুধু মজার জন্য নয়, এমন ইলিউশনগুলো আমাদের মস্তিষ্কের জন্য একধরনের ব্যায়াম হিসেবেও কাজ করে। কীভাবে?
মনোযোগ বাড়ায়: এ ধরনের চ্যালেঞ্জে মস্তিষ্ককে ধীর গতিতে এবং মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে হয়। ফলে মনোসংযোগ বাড়ে।
বিভ্রান্তি সামলানোর দক্ষতা গড়ে তোলে: এমন খেলাগুলো মস্তিষ্ককে একাধিক কাজ একসঙ্গে করতে শেখায়, যা বাস্তব জীবনেও কাজে লাগে।
চোখ ও মস্তিষ্কের সমন্বয় বাড়ে: চোখ যা দেখছে এবং মস্তিষ্ক যা বুঝছে, এই সমন্বয় দ্রুত ও নির্ভুল হলে তথ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ আরও উন্নত হয়।
মানসিক প্রশান্তি আনে: মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখতে সাহায্য করায়, এটি এক ধরনের মেডিটেটিভ অভিজ্ঞতাও দেয়। উদ্বেগ কমাতে পারে।
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে: এ ধরনের ভিজ্যুয়াল চ্যালেঞ্জ শর্ট-টার্ম মেমরি শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখে।
অর্থাৎ, এমন অপটিক্যাল ইলিউশন কেবল বিনোদন নয়, এটি একেবারে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত মস্তিষ্কের ব্যায়াম হিসেবেও কাজ করে। আপনি কি পারবেন এই বিভ্রান্তিকর রঙের খেলায় সফল হতে? চোখকে বিশ্বাস করুন, মস্তিষ্ককে একটু থামান!
সূত্র:https://tinyurl.com/2zz6cxx7
আফরোজা