ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

প্রতিদিন সকালে ১ চা চামচ কুমড়োর বীজ খাওয়ার উপকারিতা

প্রকাশিত: ১১:২৪, ১৪ মে ২০২৫

প্রতিদিন সকালে ১ চা চামচ কুমড়োর বীজ খাওয়ার উপকারিতা

ছবি: সংগৃহীত

কুমড়োর বীজ পুষ্টিগুণে ভরপুর-এতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি। তবে অতিরিক্ত খেলে ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি থেকে যায়, কারণ এগুলো ক্যালোরি-ঘন খাবার। তাই প্রতিদিন মাত্র ১ চা চামচ খাওয়া যথেষ্ট এবং উপকারী।

একটি ছোট অভ্যাস, দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব
প্রতিদিন সকালে কুমড়োর বীজ খাওয়ার অভ্যাস করা সহজ, সময়সাপেক্ষ নয় এবং এর উপকারিতা দীর্ঘস্থায়ী। এতে ডায়েটে বড় কোনো পরিবর্তন আনতে হয় না, কিন্তু এটি আপনাকে আরও সক্রিয়, সুস্থ ও সুশৃঙ্খল জীবনধারার পথে এগিয়ে দেয়। এটি সহজেই যেকোনো খাবারে যুক্ত করা যায়, তাই দিন শুরু করতে পারেন এই পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ বীজ দিয়ে।

প্রতিদিন কুমড়োর বীজ খাওয়ার ৬টি উপকারিতা
১. পুষ্টিগুণে ভরপুর।
প্রতিদিন ১ চা চামচ কুমড়োর বীজে থাকে প্রায় ৭ গ্রাম প্রোটিন, ১৩ গ্রাম স্বাস্থ্যকর চর্বি, ৩৭% আরডিআই ম্যাগনেসিয়াম, ১.৭ গ্রাম ফাইবার, ভিটামিন ই এবং ক্যারোটিনয়েডের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো প্রদাহ ও বার্ধক্য প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং হৃদ্‌যন্ত্র সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

২. হৃদ্‌যন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে।
এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে ও হৃদকম্পন স্বাভাবিক রাখে। এতে আছে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায় এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমায়। এ ছাড়া এতে থাকা ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদপিণ্ডের রক্তনালীগুলোকে সুরক্ষা দেয়।

৩. ঘুমের মান উন্নত করে।
এই বীজে থাকা ট্রিপটোফ্যান অ্যামিনো অ্যাসিড থেকে শরীরে তৈরি হয় সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন, যা ঘুম ও মেজাজ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। ম্যাগনেসিয়াম নার্ভকে শান্ত করে ঘুম আসতে সাহায্য করে, আর জিঙ্ক ট্রিপটোফ্যানকে কার্যকরভাবে রূপান্তর করে।

৪. রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
কুমড়োর বীজে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ফাইবার হজম ধীর করে, ফলে গ্লুকোজ ধীরে রক্তে প্রবেশ করে এবং রক্তে শর্করার দ্রুত বৃদ্ধির ঝুঁকি কমে যায়। এটি ডায়াবেটিস বা প্রিডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।

৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
জিঙ্ক রোগ প্রতিরোধে কার্যকর একটি খনিজ, যা কোষকে সক্রিয় রাখে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ভিটামিন ই, আয়রন, প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে এবং কোল্ড বা সর্দি-কাশির সময়কাল কমিয়ে দেয়।

৬. ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী।
জিঙ্ক ত্বক নিরাময়, ব্রণ কমানো এবং চুলের গোড়া শক্ত করতে সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন সি ত্বককে উজ্জ্বল রাখে ও বার্ধক্য প্রতিরোধে সহায়তা করে। সেলেনিয়াম ও আয়রন রক্তসঞ্চালন উন্নত করে, চুল পড়া কমায় এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।

কীভাবে খাবেন কুমড়োর বীজ?
কাঁচা বা হালকা ভাজা অবস্থায় খাওয়া যায়।

সালাদ, ওটস, দই বা স্মুদি তে মিশিয়ে নিতে পারেন। হোমমেড গ্রানোলা বার, মাফিন, এনার্জি বল বা রুটি তৈরিতে ব্যবহার করা যায়।

প্রতিদিন মাত্র ১ চা চামচ কুমড়োর বীজ খাওয়া হতে পারে আপনার সুস্থ জীবনের একটি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে মনে রাখবেন-মাত্রাতিরিক্ত নয়, নিয়মিত হোক অভ্যাস।

মিরাজ খান

×