ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

কোমর ব্যথায় ভুগছেন! ঝুঁকি এড়াবেন যেভাবে

প্রকাশিত: ২১:৫৬, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

কোমর ব্যথায় ভুগছেন! ঝুঁকি এড়াবেন যেভাবে

কোমর ব্যথা 

আজকাল অনেকই বলে থাকেন দিন দিন আমরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছি, ধরুন কাঁধ ব্যথা, পিঠ ব্যথা বা কোমর ব্যথা। কারো কারো ধারনা বিভিন্ন খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তনের জন্য হতে পারে অথবা গাড়ির ধোঁয়া বা বড় বড় অট্টালিকার কারনে এই রোগ হতে পারে। 

কিন্তু বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে উপরোক্ত কারন ছাড়াই কোমর ব্যথা হতে পারে। কোমর ব্যথার রোগী এত বেড়েছে যে প্রায় পরিবারেই কোমর ব্যথার রোগী আছে। ২০-২৫ বছরের যুবক থেকে শুরু করে ৬০ বছর বয়স্ক লোকের মধ্যে এই কোমরের ব্যথা বেশি হচ্ছে। আমেরিকা, ইউরোপ এবং বিশ্ব ব্যাক পেইন সোসাইটির বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে ৮০ ভাগ প্রাপ্ত বয়স্ক লোকেরা জীবনের কোন না কোন সময় কোমর ব্যথায় ভুগে থাকেন। 

অফিসে সারা ক্ষণ বসে থাকা, শারীরিক পরিশ্রম তুলনায় কম করা, শরীরচর্চার অভাব, এমন বেশ কিছু কারণে কোমরের ব্যথার সমস্যায় নাজেহাল কমবেশি অনেকেই। কম বয়সিদের মধ্যেই এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ক্রমশ এই সমস্যাও দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি ল্যানসেট পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণা জানাচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে ৮০ কোটিরও বেশি লোক কোমরে ব্যথার সমস্যায় ভুগবে। কোমরে ব্যথার সমস্যাও বৃদ্ধি পাবে ৩৬ শতাংশ।

সমীক্ষায় বলছে, ২০১৭ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ৫০ কোটিরও বেশি লোক কোমরের ব্যথায় ভুগছেন। ২০২০ সালে গোটা দেশে প্রায় ৬১.৯ কোটি মানুষ পিঠ এবং কোমরের ব্যথায় আক্রান্ত হয়েছেন। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা জানাচ্ছে, পিঠ এবং কোমরের ব্যথার সমস্যায় এগিয়ে রয়েছে এশিয়া এবং আফ্রিকার মতো দেশ।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, আপাতদৃষ্টিতে পিঠে, ও কোমরে  ব্যথার মতো সমস্যা খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখেন না অনেকেই। কিন্তু এই ব্যথা পুষে রাখলে দীর্ঘস্থায়ী অনেক রোগের জন্ম হয়। কোমরে ব্যথার সূত্র ধরে ডায়াবিটিস, হৃদ্রোগ এবং মানসিক অস্থিরতার মতো নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই পিঠে ব্যথা এড়িয়ে না গিয়ে বরং আরও চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে রোজের জীবনেও কিছু বদল আনা জরুরি।

১) শরীরের বাড়তি ওজন পিঠ ও কোমরে ব্যথার সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই ওজন কোনও ভাবেই বাড়তে দেওয়া যাবে না। সেই সঙ্গে ক্যালশিয়াম, ভিটামিন ডি-সহ খাবার বেশি করে খান। হাঁড়ের যতœ নিতে এগুলি অত্যান্ত জরুরি।

২) শরীরচর্চার অভ্যাস বজায় রাখুন। রোজ এক বার হলেও ব্যায়াম করুন। যোগাসন করুন। সাঁতার কাটতে পারেন। খুব ভাল ব্যায়াম এটি। মোট কথা ফিট থাকার চেষ্টা করুন। ফিটনেস কমে গেলে ব্যথা-বেদনা চলতেই থাকবে।

৩) ধূমপানও কিন্তু পিঠে এবং কোমর ব্যথার কারণ হতে পারে। এই অভ্যাস মেরুদণ্ডের ক্ষয় করতে থাকে। এই কারণে পিঠে ব্যথা হতে পারে। সুস্থ থাকতে ধূমপান করা থেকে দূরে থাকুন।

৪) কাজের চাপ থাকলেও অফিসে একটানা বসে থাকবেন না। কয়েক মিনিটের জন্য হলেও হেঁটে আসুন। উঠে সোজা হয়ে দাঁড়ান। কোমরের ব্যায়াম করে নিন। তাতে কিছুটা হলেও লাভ হবে।

প্রফেসর আলতাফ হোসেন সরকার, মাস্কুলোস্কেলিটাল বিশেষজ্ঞ
 

 

এস

×