ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৮ মে ২০২৫, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পরিপত্র জারি, পরিবর্তন হলো এজমালি সম্পত্তি ভাগাভাগি ও নামজারি করার পদ্ধতি

প্রকাশিত: ২১:০৪, ২৬ মে ২০২৫; আপডেট: ২১:০৪, ২৬ মে ২০২৫

পরিপত্র জারি, পরিবর্তন হলো এজমালি সম্পত্তি ভাগাভাগি ও নামজারি করার পদ্ধতি

ছবিঃ সংগৃহীত

সরকারি নির্দেশনায় দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে, এজমালি (অবিভক্ত যৌথ মালিকানাধীন) সম্পত্তি ভোগ, দখল এবং নামজারির পদ্ধতিতে কঠোর নিয়ম-কানুন প্রণয়ন করে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট এসিল্যান্ড অফিসগুলোকে।

এখন থেকে কোনো ওয়ারিশগণ যদি পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে সম্পত্তি বণ্টন না করেন, তাহলে তাদের সকলের নামে যৌথভাবে একটি খতিয়ান প্রস্তুত করা হবে। এতে ব্যক্তিগতভাবে দাগ ধরে মালিকানা দাবি করে নামজারি বা খতিয়ান সংশোধনের আর কোনো সুযোগ থাকবে না। এজমালি খতিয়ানে স্পষ্টভাবে কার কতটুকু অংশ তা নির্ধারিত না থেকে, সকল ওয়ারিশগণকে সমানভাবে মালিকানায় দেখানো হবে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত পরিপত্র অনুযায়ী, কোন ওয়ারিশ এককভাবে কোনো সম্পত্তির দখল নিয়ে নিজের নামে খতিয়ান সংশোধন করলে তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। একইসঙ্গে, এ ধরনের খতিয়ান সংশোধন প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত থাকবে—তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও সুযোগ থাকবে।

সরকারি এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জমিজমা নিয়ে ওয়ারিশদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা দ্বন্দ্ব ও প্রতারণার প্রবণতা কমানো। অতীতে অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, এক বা একাধিক ওয়ারিশ পরস্পরের অজ্ঞাতসারে ভূয়া দলিল তৈরি করে বা বিচার শালিশের মাধ্যমে খতিয়ান সংশোধন করে নিচ্ছিলেন। এসব প্রক্রিয়ায় অসংখ্য মামলা-মোকদ্দমা এবং পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হচ্ছিল।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যদি সম্পত্তির কোনো অংশ বণ্টন করতে হয়, তাহলে তা অবশ্যই একটি লিখিত বাটোয়ারা দলিলের মাধ্যমে করতে হবে। এই দলিলে কে কোন অংশে কতটুকু সম্পত্তি ভোগ করবেন তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে এবং রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। এর ভিত্তিতে পরবর্তীতে আলাদা খতিয়ান তৈরি করে নামজারি করা যাবে।

আর যদি ওয়ারিশগণ আপস-মীমাংসায় না পৌঁছান, তাহলে তাদের নামজারির আগে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ বা সিটি কর্পোরেশন থেকে ওয়ারিশ সনদ সংগ্রহ করতে হবে এবং সকল ওয়ারিশের যৌথ খতিয়ান প্রস্তুত করেই সম্পত্তি ভোগ করতে হবে।

ভূমি অফিসকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যাতে তারা যৌথ খতিয়ান তৈরিতে কোনো গড়িমসি না করে এবং অযথা আবেদন বাতিল না করে। কোনো কর্মকর্তা নিয়ম ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রাখছে সরকার।

এই নতুন পদ্ধতির ফলে আশা করা যাচ্ছে, ভূমি মালিকদের হয়রানি কমবে, আদালতের মামলা-মোকদ্দমা হ্রাস পাবে এবং প্রতারক চক্রের অপতৎপরতা রোধ হবে।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এবং পরামর্শ নিতে নাগরিকদের একজন দক্ষ আইনজীবীর শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তথ্যসূত্রঃ https://youtu.be/e50NOi1QAA0?si=NO3ZeRKkf7gD6Va1

মারিয়া

×