
ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশে ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা ও দখল-বেদখলের অভিযোগ নতুন নয়। তবে ‘ভূমি অপরাধ ও প্রতিরোধ আইন’-এর ৭ নম্বর ধারার আলোকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, চার শ্রেণির নির্দিষ্ট মালিকদের তাদের জমি থেকে কোনোভাবেই উচ্ছেদ করা যাবে না।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা এই আইন সম্পর্কে সচেতন, তারা আগেভাগেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুছিয়ে রেখে নিজেদের মালিকানা সুরক্ষিত রাখতে পারেন। এখানে মূল নির্ধারণী ফ্যাক্টর হলো "সর্বশেষ জরিপে নাম থাকা", যা ভূমির মালিকানা নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উচ্ছেদ করা যাবে না এমন চার শ্রেণির মালিক হলেন:
১. সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী রেকর্ডভুক্ত মালিক: যেকোনো সরকারি জরিপ—তা বিএস (BRS), সিটি জরিপ, আরএস (RS) বা এসএ (SA) হোক না কেন—সর্বশেষ জরিপে যাদের নাম মালিক হিসেবে রয়েছে, তাদের উচ্ছেদ করার অধিকার কারো নেই।
২. ওই রেকর্ডভুক্ত মালিকের উত্তরাধিকারগণ: যদি মূল মালিক মারা যান, তবে তার বৈধ ওয়ারিশদেরকেও উক্ত জমি থেকে উচ্ছেদ করা যাবে না।
৩. রেকর্ডভুক্ত মালিক বা তার উত্তরাধিকার থেকে জমি ক্রয়কারী: যারা বৈধ দলিলের মাধ্যমে রেকর্ডভুক্ত মালিক কিংবা তার উত্তরাধিকারদের কাছ থেকে জমি কিনেছেন, তারাও উচ্ছেদের আওতা থেকে সুরক্ষিত।
৪. আদালতের রায়প্রাপ্ত জমির মালিক: কোনো উপযুক্ত আদালত—হোক তা দেওয়ানি, ফৌজদারি বা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত—যদি কাউকে কোনো জমির মালিক বা দখলদার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে সেই আদেশই চূড়ান্ত এবং ঐ ব্যক্তিকে জমি থেকে উচ্ছেদ করা যাবে না।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই চার শ্রেণির মধ্যে সর্বোচ্চ সুরক্ষায় থাকা মালিক হলেন সেই ব্যক্তি, যাকে আদালতের রায়ে জমির মালিক বা দখলদার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কারণ আদালতের রায় যে কোনো দলিল বা জরিপের চেয়েও শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে গণ্য হয়।
সতর্কতা ও পরামর্শ:
ভূমি সংক্রান্ত জটিলতায় না পড়তে চাইলে নাগরিকদের উচিত নিজেদের জমির কাগজপত্র সঠিকভাবে হালনাগাদ রাখা এবং প্রয়োজনে আইনগত পরামর্শ নেওয়া।
নুসরাত