ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

এবার ইসরায়েলকে ‘গণহত্যাকারী’ ঘোষণা দিয়ে কয়লা রফতানি বন্ধ করলো কলম্বিয়া

প্রকাশিত: ১৬:৩৬, ২৭ জুলাই ২০২৫

এবার ইসরায়েলকে ‘গণহত্যাকারী’ ঘোষণা দিয়ে কয়লা রফতানি বন্ধ করলো কলম্বিয়া

ছবি: সংগৃহীত

গাজায় চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্ব যখন কার্যত নীরব, তখন ব্যতিক্রমী এক কঠোর অবস্থান নিয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ কলম্বিয়া। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বরতা বন্ধে এবার ইসরাইলে কয়লা রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো। তার দৃপ্ত ঘোষণা— নিজস্ব অর্থনীতি ক্ষতির মুখে পড়লেও গণহত্যার অংশীদার হতে চান না তিনি।

ইসরায়েল গত দুই বছর ধরে গাজায় ব্যাপক গণহত্যা চালাচ্ছে। দুর্ভিক্ষ, অনাহার এবং বিমান হামলায় প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছে হাজারো শিশু ও সাধারণ মানুষ। একের পর এক ত্রাণকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে অসহায় মানুষের মৃত্যু ঘটাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতসব বর্বরতার মধ্যেও মুসলিম বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ পশ্চিমাদের খুশি রাখতে নীরব ভূমিকা পালন করছে। নিন্দা জানানো ছাড়া বাস্তব কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি অধিকাংশ আরব রাষ্ট্রকে।

ঠিক এমন সময়ে বিশ্বের নজর কেড়েছে কলম্বিয়ার পদক্ষেপ। দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি ইসরায়েলকে গণহত্যাকারী রাষ্ট্র হিসেবে আখ্যা দিয়ে কয়লা রপ্তানি বন্ধ করেছে। 

প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো বলেন, “ইসরাইলে এক টন কয়লাও পাঠানো হবে না। আমি কলম্বিয়ার সকল নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানকে সাবধান করছি এই ইস্যুতে। মনে রাখবেন, এটা আমার সরাসরি নির্দেশ। যতদিন ইসরায়েল নিরীহ মানুষের উপর বোমা ফেলবে, শত শত মানুষকে হত্যা করবে, ততদিন কলম্বিয়া থেকে ইসরায়েল কোনো কয়লা পাবে না। আমরা কোনোভাবেই গণহত্যার অংশীদার হতে চাই না।”

প্রায় এক বছর আগেই ইসরাইলে কয়লা রপ্তানি বন্ধে সরকারি নির্দেশ জারি করেছিলেন প্রেসিডেন্ট পেত্রো। তবে ওই নির্দেশ অমান্য করে প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা অবৈধভাবে রপ্তানি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

এ সিদ্ধান্তে চরম ক্ষুব্ধ লাতিন আমেরিকার বড় বড় বহুজাতিক কয়লা কোম্পানিগুলো। দেশটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি খাত হিসেবে কয়লা শিল্প বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে। কিন্তু সেই ক্ষতির ঝুঁকি নিয়েই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কলম্বিয়া।

উল্লেখযোগ্য যে, ইসরায়েলের কয়লা চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশই পূরণ হতো কলম্বিয়া থেকে আমদানির মাধ্যমে। সেই নির্ভরতা এখন বড় রকমের সংকটে পড়েছে, যা ইসরায়েলি জ্বালানি নীতির ওপরও প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

শেখ ফরিদ 

×