
ছবি: সংগৃহীত।
ইরানের সঙ্গে টানা ১২ দিনের যুদ্ধ শেষে যুদ্ধবিরতির ঘোষণার মাত্র দুই দিন পরেই মধ্যপ্রাচ্যের আরেক মুসলিম দেশ লেবাননে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার দক্ষিণ লেবাননের একাধিক স্থানে চালানো এই হামলায় একজন নারী নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।
তুরস্কভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানায়, ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানগুলো দক্ষিণ লেবাননের আলি আল তাহের, কফার তেবনিত এবং নাবাতিহে আল ফোকার বনাঞ্চল ও পার্বত্য এলাকায় কনকাশন রকেট ও বোমা হামলা চালায়। প্রথম দফার বিস্ফোরণের ১০ মিনিটের মাথায় একই এলাকায় আবারও বোমা বর্ষণ করা হয়।
লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, এই হামলায় বেসামরিক জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা দক্ষিণ লেবাননের মাউন্ট শাফি এলাকায় হিজবুল্লাহর একটি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, “হিজবুল্লাহ ঘাঁটি পুনর্গঠনের চেষ্টা করছিল, সেই স্থাপনাটিকেই লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।” যদিও হিজবুল্লাহ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
উল্লেখ্য, ইসরায়েল ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর থেকে লেবাননে ধারাবাহিক হামলা শুরু করে, যা ২০২৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে রূপ নেয়। এ সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১৭ হাজার। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন অন্তত ১৪ লাখ লেবানিজ নাগরিক।
২০২৪ সালের নভেম্বরে ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও ইসরায়েল তা বহুবার লঙ্ঘন করেছে। লেবাননের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইসরায়েল অন্তত ৩ হাজার বার চুক্তি ভেঙেছে, এতে ২০৮ জন নিহত এবং ৫০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েলের ২৬ জানুয়ারি ২০২৫-এর মধ্যে দক্ষিণ লেবানন থেকে পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার করার কথা থাকলেও নেতানিয়াহুর সরকারের অনীহায় সেই সময়সীমা বাড়িয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি করা হয়। কিন্তু তারপরও দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি সীমান্ত পোস্টে ইসরায়েলি সেনা মোতায়েন রাখা হয়েছে, যা চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিযোগ করেছে বৈরুত।
নুসরাত