
ছবিঃ সংগৃহীত
ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘাতে নিহত প্রায় ৬০ জন ইরানির জন্য তেহরানে রাষ্ট্রীয়ভাবে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, বিপ্লবী গার্ডসের কমান্ডার এবং কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানী।
তেহরানের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ইনকিলাব স্কয়ারে শত শত মানুষ কালো পোশাকে হাজির হন। ইরানি পতাকায় মোড়ানো কফিনগুলোতে নিহতদের ছবি টাঙানো ছিল, আর জনতা শোকবিহ্বল হয়ে স্লোগান দেন ও ইরানের পতাকা ওড়ান।
নিহতদের মধ্যে ছিলেন দেশের সর্বোচ্চ সামরিক প্রধান
রাষ্ট্রীয় এই জানাজায় অন্যতম ছিলেন মোহাম্মদ বাঘেরি, যিনি ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এবং দেশের সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এছাড়া জানাজায় অংশ নেয়া অন্যদের মধ্যে আছেন হোসেইন সালামি, ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধান, এবং ড. মোহাম্মদ মেহদি তাহেরানচি, যিনি তেহরানের আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট এবং একজন পরমাণু বিজ্ঞানী।
এই সংঘাত গত সপ্তাহে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শেষ হয়। তবে তার আগে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইরানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়, যা ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্বাস আরাগচি “গুরুতর ও অতিরিক্ত ক্ষতি” বলে স্বীকার করেছেন।
এই ঘটনার পর হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “ইরান যদি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণে উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে, তাহলে তারা আবারো হামলার শিকার হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমি জানি আয়াতুল্লাহ খামেনেই কোথায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। আমি ইচ্ছা করলেই তাঁর জীবন শেষ করতে পারতাম, কিন্তু করি নাই।”
ট্রাম্প এক পোস্টে বলেন, “আমি ওকে (খামেনেই) অপমানজনক এক মৃত্যু থেকে রক্ষা করেছি। আমাকে ধন্যবাদ না দিলেও চলবে।” তিনি আরও দাবি করেন, “ইরান জানে যে তারা যুদ্ধ জেতেনি, তাদের দাবি মিথ্যা।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্বাস আরাগচি ট্রাম্পের মন্তব্যকে “অসম্মানজনক” বলে উল্লেখ করে বলেন, “কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে চাইলে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতি এ ধরনের ভাষা ব্যবহার গ্রহণযোগ্য নয়।”
তিনি আরও বলেন, “ইসরায়েলকে রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্রকেই এগিয়ে আসতে হয়েছে, সেটাই প্রমাণ করে কে প্রকৃত বিজয়ী।”
এই জানাজা অনুষ্ঠান এবং যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের বাকযুদ্ধের মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার সঞ্চার হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু কর্মসূচি ও সামরিক উত্তেজনা ঘিরে পরিস্থিতি যেকোনো সময় আবারও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
সূত্র: রয়টার্স
নোভা