ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২

শেরপুর সীমান্তে

বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় বালুদস্যুদের আক্রমণে জুলাই যোদ্ধা আহত

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর

প্রকাশিত: ১৬:২২, ২৮ জুন ২০২৫

বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় বালুদস্যুদের আক্রমণে জুলাই যোদ্ধা আহত

জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জুলাই যোদ্ধা আরিফ রেজা

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও পরিবহনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় মারধরের শিকার হয়েছেন মো. আরিফ রেজা (২১) নামে এক ‘জুলাই যোদ্ধা’। শুক্রবার (২৭ জুন) সন্ধ্যায় শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী কর্ণঝোড়া এলাকার মেঘাদল বাজার (শয়তান বাজার) এলাকায় বালুদস্যু ও চোরাকারবারিদের হামলায় এ ঘটনা ঘটে। আহত আরিফ গোসাইপুর ইউনিয়নের গিলাগাছা গ্রামের মো. রজব আলীর ছেলে। বর্তমানে তিনি শেরপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয় সচেতন মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শ্রীবরদীর কর্ণঝোড়া এলাকার ঢেউফা নদী ও আশপাশের পাহাড় থেকে দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করে আসছে একটি প্রভাবশালী চক্র। পরিবেশ ধ্বংস করে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে স্থানীয় সচেতন মহল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা বিভিন্ন সময় বাধা দিয়ে আসছেন। এমনকি অবৈধ বালু পরিবহনের যান আটক করে প্রশাসনের নজরে এনেছেন তারা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার অভিযান চালিয়ে বাঁশের মাচা, ড্রেজার মেশিন ও অন্যান্য সরঞ্জাম ধ্বংস করা হয়েছে। তবুও থামছে না অবৈধ বালু উত্তোলন।

জানাগেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় আরিফসহ কয়েকজন কর্ণঝোড়ার শয়তান বাজার এলাকায় গিয়ে বালু ভর্তি দুটি মাহেন্দ্র ট্রাক্টর দেখতে পান। তারা ট্রাক থামিয়ে চালকের কাছে জিজ্ঞাসা করেন বালুর উৎস সম্পর্কে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে বালুদস্যু বিপ্লব ও তার অনুসারীরা অতর্কিতে হামলা চালায় আরিফদের ওপর। এতে আরিফ গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান, সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে।

আহত আরিফ বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আমি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম। আমার শরীরে এখনও সেই আঘাতের চিহ্ন আছে। এখন পাহাড় ধ্বংস ঠেকাতে গিয়ে আবারও হামলার শিকার হলাম। বালুদস্যু বিপ্লব প্রকাশ্যে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করছে। আমি এর বিচার চাই।”

শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফুর রহমান বলেন, “আহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এখন তার অবস্থা স্থিতিশীল।”

শ্রীবরদী থানার ওসি মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, “এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

শেরপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূখ্য সংগঠক মোর্শেদ জিতু বলেন, “খবর পেয়ে আমরা আরিফকে হাসপাতালে স্থানান্তর করি এবং বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও প্রশাসনকে জানাই। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার না করা হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।”

সানজানা

×