ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৯ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

হারেৎজের প্রতিবেদন

গাজায় প্রায় এক লাখ ফিলিস্তিনি নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:৫৯, ২৮ জুন ২০২৫

গাজায় প্রায় এক লাখ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজায় ত্রাণ নিয়ে ঘরে ফিরছেন ফিলিস্তিনিরা

গাজায় চলমান যুদ্ধে প্রায় এক লাখ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যা ভূখ-টির মোট জনসংখ্যার প্রায় চার শতাংশ। ইসরাইলের প্রভাবশালী দৈনিক হারেৎজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এই পরিসংখ্যান গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। খবর হারেৎজের।
হারেৎজ জানায়, শুধু ইসরাইলি হামলায় নয় গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ফলে ক্ষুধা, ঠান্ডা ও রোগবালাইয়ের কারণেও বিপুলসংখ্যক মানুষ মারা গেছেন। পত্রিকাটি লিখেছে ইসরাইলি মুখপাত্র, সাংবাদিক ও প্রভাবশালীরা গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যকে বরাবরই অস্বীকার করে অতিরঞ্জন বলে মন্তব্য করেছেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সংখ্যা অতিমাত্রায় নয়, বরং বাস্তবের তুলনায় রক্ষণশীল হিসাব। হারেৎজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, লন্ডনের ইউনিভার্সিটি অব হোলোওয়ের অর্থনীতিবিদ ও সংঘাতজনিত মৃত্যু নিয়ে গবেষণার বিশেষজ্ঞ প্রফেসর মাইকেল স্প্যাগাট গাজায় মৃত্যুর হার নিয়ে একটি সমীক্ষা পরিচালনা করেন।

এতে গাজার দুই হাজার পরিবার অর্থাৎ প্রায় ১০ হাজার মানুষ অন্তর্ভুক্ত ছিল। সমীক্ষায় দেখা গেছে, জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত গাজায় ৭৫ হাজার ২০০ মানুষ সরাসরি সহিংস মৃত্যুর শিকার হয়েছেন, যার বেশিরভাগই ইসরাইলি অস্ত্রের কারণে। এই মৃত্যুর মধ্যে ৫৬ শতাংশই শিশু ও নারী। হারেৎজ বলেছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রায় সব সংঘাতে এ ধরনের উচ্চ নারী-শিশু মৃত্যুহার বিরল। প্রফেসর স্প্যাগাট গাজাযুদ্ধকে তিনি ২১ শতকের অন্যতম রক্তক্ষয়ী সংঘাত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সিরিয়া, ইউক্রেন ও সুদানের তুলনায় গাজায় নাগরিক ও সামরিক বাহিনীর নিহতের অনুপাত এবং জনসংখ্যার হারে মৃত্যু সবচেয়ে বেশি।

তথ্য অনুযায়ী, সহিংস মৃত্যুর শিকার হওয়া নারীদের ও শিশুদের অনুপাত গাজায় ৫০ শতাংশের বেশি, যেখানে কসোভোতে তা ছিল ২০ শতাংশ, উত্তর ইথিওপিয়ায় ৯ শতাংশ, সিরিয়ায় ২০ শতাংশ ও সুদানে ২৩ শতাংশ। স্প্যাগাট বলেন, আমার ধারণা গাজার প্রায় ৪ শতাংশ জনসংখ্যা নিহত হয়েছে। ২১ শতকে এর চেয়ে বেশি জনসংখ্যার অনুপাতে মৃত্যু আর কোথাও ঘটেনি। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইল গাজায় চরম সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে, যা আন্তর্জাতিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও অব্যাহত রয়েছে।

×