
ছবি: সংগৃহীত
সকালের স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে গাজর ও আদার রস খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই দুটি উপাদানই পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং একসাথে মিশিয়ে তৈরি করা এই রস শরীরের নানা দিক থেকে উপকার করে থাকে। শুধু রুচিকর স্বাদ নয়, বরং প্রতিদিন এক গ্লাস গাজর-আদার রস শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, হজমে সহায়তা করতে এবং ত্বক পরিষ্কার রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কীভাবে বানাবেন গাজর-আদার রস?
২-৪টি গাজর ও ১ ইঞ্চি আদা ধুয়ে, ছেঁচে কুচি করে নিন। এবার এক কাপ পানির সঙ্গে একসাথে ব্লেন্ড করুন। ছেঁকে নিয়ে তাতে অল্প লেবুর রস মিশিয়ে দিন। ফ্রেশ থাকতেই পান করুন।
পাঁচটি উপকারিতা
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
গাজরে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন A, C এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আদায় আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ। একসাথে এই রস শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে মজবুত করে এবং ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, গাজরের ক্যারোটিনয়েড ও ভিটামিন শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করে। অপরদিকে, আদা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের মতো অটোইমিউন রোগে প্রদাহ কমাতেও সহায়ক।
২. চোখের জন্য উপকারী
গাজরের বিটা-ক্যারোটিন ভিটামিন A তে রূপান্তরিত হয়ে চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। এটি ছানি ও বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন প্রতিরোধে সহায়ক।
গাজরে থাকা লুটেইন চোখকে UV আলো থেকে রক্ষা করে। পাশাপাশি আদার ইমিউন বুস্টিং প্রভাব চোখে সংক্রমণ যেমন কনজাংকটিভাইটিস (পিংক আই) প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৩. হজমে সহায়ক
আদা হজম এনজাইম সক্রিয় করে এবং পেটের ফোলাভাব কমায়। গাজর পাকস্থলির আস্তরণকে শান্ত করে। গাজরের ফাইবার হজম শক্তি বাড়ায় এবং মলত্যাগ নিয়মিত রাখতে সাহায্য করে।
গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি এক কাপ কাটা গাজরে প্রায় ৩.৫৮ গ্রাম ফাইবার থাকে, যা কোলোরেক্টাল ক্যান্সার রোধে সহায়ক। আদা গ্যাস্ট্রিক এনজাইম বাড়িয়ে হজমে সাহায্য করে।
৪. হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখে
গাজর ও আদা উভয়ই প্রদাহ কমায়, খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমায় এবং রক্ত চলাচল উন্নত করে। এতে হার্ট ভালো থাকে ও হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
গবেষণায় দেখা গেছে, গাজর রস অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষমতা বাড়ায় এবং লিপিড পারঅক্সিডেশন কমিয়ে হার্টকে রক্ষা করে। আদায় থাকা জিঞ্জারলস ও শোগাওলস রক্তচাপ কমাতে ও রক্ত পাতলা রাখতে ভূমিকা রাখে।
৫. ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল করে
গাজর ও আদা একসাথে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে ত্বককে ভিতর থেকে পরিষ্কার করে তোলে। গাজরের খোসায় থাকে অধিক ক্যারোটিনয়েড ও ফেনলিক অ্যাসিড, যা ত্বককে অক্সিডেটিভ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
আদার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বয়সের ছাপ, বলিরেখা এবং সূর্যরশির কারণে ত্বক ক্ষয়ের বিরুদ্ধে কাজ করে। নিয়মিত এই রস পান করলে ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আসে।
মুমু ২