
ছবি: সংগৃহীত
রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেশি থাকলে ম্যালিগন্যান্ট মেলানোমা (MM) ও নন-মেলানোমা স্কিন ক্যান্সার (NMSC)—এই দুই ধরনের ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যেতে পারে। সম্প্রতি Clinical, Cosmetic and Investigational Dermatology-তে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন এ তথ্য জানায়।
চীনের ম্যাকাও ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির মেডিসিন অনুষদের গবেষক ড. ইহাও নিউ এবং তার সহকর্মীরা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য ও পুষ্টি জরিপ (NHANES)-এর ১৯৯৯ থেকে ২০২০ পর্যন্ত সময়ের বিশাল তথ্যভাণ্ডার বিশ্লেষণ করে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন মোট ১,২১৯ জন ব্যক্তি, যাদের মধ্যে ৩৩৬ জন মেলানোমা ও ৮৮৩ জন নন-মেলানোমা স্কিন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন।
কী বলছে গবেষণা?
- ১ মিগ্রা/ডেসি লিটার ইউরিক এসিড বৃদ্ধির সঙ্গে ১৯% বেশি মেলানোমা ঝুঁকি ও ১৩% বেশি নন-মেলানোমা স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি দেখা গেছে।
- নারীদের ও মেক্সিকান আমেরিকানদের মধ্যে এই ঝুঁকির প্রবণতা আরও বেশি।
- বয়স্কদের (৬০+) ক্ষেত্রে ইউরিক এসিডের মাত্রা মেলানোমার ঝুঁকির সঙ্গে বেশি সম্পর্কযুক্ত, আর তরুণদের ক্ষেত্রে ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে নন-মেলানোমা স্কিন ক্যান্সার বেশি দেখা গেছে।
- যদিও ইউরিক এসিডের সঙ্গে স্কিন ক্যান্সারের সম্পর্ক স্পষ্ট, তথাপি কারণিক সম্পর্ক (causal relationship) প্রমাণিত হয়নি। অর্থাৎ ইউরিক এসিড সরাসরি ক্যান্সার সৃষ্টি করে এমন নয়।
গবেষক দল মেন্ডেলিয়ান র্যান্ডমাইজেশন নামক জেনেটিক বিশ্লেষণ পদ্ধতি ব্যবহার করে এ সম্পর্কের কারণিক দিকগুলো যাচাই করেন। এতে ইনভার্স ভ্যারিয়েন্স ওয়েটিং (IVW), MR-Egger এবং Weighted Median মেথড ব্যবহার করা হয়, তবে ফলাফলে ইউরিক এসিডকে সরাসরি ত্বকের ক্যান্সারের কারণ হিসেবে শনাক্ত করা যায়নি।
ইউরিক এসিড কি তবে সতর্কসংকেত?
গবেষকদের মতে, ইউরিক এসিড হয়তো ত্বকের ক্যান্সারের সরাসরি কারণ নয়, কিন্তু এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্ন হিসেবে কাজ করতে পারে। কারণ ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে দেহে প্রদাহ, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ও ইমিউন সিস্টেমে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, যা ক্যান্সার সৃষ্টির পরিবেশ তৈরি করতে পারে।
তারা আরও বলেন, ‘এই ফলাফল চিকিৎসকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ—কারণ ইউরিক এসিডের মাত্রা দেখে ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি নিরূপণ ও আগাম সতর্কতা নেওয়া সম্ভব হতে পারে।’
গবেষকরা ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত গবেষণার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে বেসিক সায়েন্স, জেনেটিক বিশ্লেষণ ও দীর্ঘমেয়াদি তথ্য সংগ্রহ করে নিশ্চিতভাবে বোঝা যায়—শরীরে ইউরিক এসিডের মাত্রা কমানো ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাসে সহায়ক কি না।
নিয়মিত রক্তপরীক্ষার মাধ্যমে ইউরিক এসিডের মাত্রায় নজরে রাখা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা ও চিকিৎসকের পরামর্শে জীবনযাপন ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সূত্র: https://medicaldialogues.in/dermatology/news/high-uric-acid-levels-tied-to-elevated-risk-of-skin-cancer-study-finds-149815
রাকিব