ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে সহায়তা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ১৭:০২, ২৮ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৭:০৪, ২৮ জুন ২০২৫

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে সহায়তা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

ছবি: সংগৃহীত।

ইরান ও ইসরায়েলের চলমান উত্তেজনার মাঝেই উঠে এসেছে এক চমকপ্রদ খবর—ইরানের পরমাণু প্রকল্পে বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন চায়, ইরান যেন কেবল শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক খাতে পরমাণু শক্তি ব্যবহার করে। সে লক্ষ্যেই তারা দেশটির বিধ্বস্ত পরমাণু অবকাঠামোতে প্রায় ৩ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের চিন্তা করছে।

সিএনএন জানায়, চলতি বছরের জুন মাসের গোড়াতেই যুক্তরাষ্ট্র, তেহরান এবং মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি মিত্র রাষ্ট্রের মধ্যে এই সংক্রান্ত গোপন আলোচনা শুরু হয়। এই আলোচনার সূচনা ঘটে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত শুরুর আগেই, যদিও তা এখন আন্তর্জাতিক পরিসরে বড় সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের চারজন উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা সিএনএনকে জানান, যুক্তরাষ্ট্র চায় ইরান যেন স্থায়ীভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বন্ধ করে দেয়। তবে ইরান এটিকে তার "রেডলাইন" বা অতিক্রম না করার সীমানা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

একজন কর্মকর্তা বলেন, “আমরা চাই বিষয়টা জটিল না হয়ে বরং সহজ সমঝোতায় গড়াক। এজন্যই বিনিয়োগের পরিকল্পনা করা হয়েছে। আপাতত ২ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকার মতো বিনিয়োগ হতে পারে। এর একটি অংশ দেবে যুক্তরাষ্ট্র, বাকি অংশ আসবে আমাদের মিত্র ও অংশীদার দেশগুলো থেকে।”

ইরানকে আলোচনায় আনতে কেবল বিনিয়োগ নয়, অর্থনৈতিক ছাড়ও দিতে রাজি যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে রয়েছে: বিদেশি ব্যাংকে ফ্রিজড ৬০০ কোটি ডলার মুক্ত করার প্রস্তাব, ইরানি তেলের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার পরিকল্পনা, এই সবকিছুই যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে সম্ভাব্য সমঝোতার অংশ হিসেবে।

তবে ইরান এই প্রস্তাবে রাজি হবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। আরেক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা এখনো আনুষ্ঠানিক সাড়া পাইনি। আভাস ও ইঙ্গিতের মাধ্যমে প্রস্তাব পৌঁছে দিয়েছি, তবে তেহরান কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব।”

উল্লেখযোগ্য যে, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র মে মাস থেকে পরমাণু প্রকল্প নিয়ে সংলাপে ছিল। কিন্তু ১২ জুন ইসরায়েল অভিযোগ তোলে—ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। এরপরই ইসরায়েল তেহরানসহ কয়েকটি শহরে বিমান হামলা চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে।

পরিস্থিতি চরমে পৌঁছালে ২৩ জুন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। মার্কিন বিমান বাহিনী ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায়। পরদিনই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা দেন ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি।

উৎস: সিএনএন, আরটি
 

সায়মা ইসলাম

আরো পড়ুন  

×