ভারতের মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা: পরিচয় মিলছে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে

ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে ভয়াবহ একটি বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে একজন যাত্রী জীবিত উদ্ধার হয়েছেন, যাঁর নাম বিশ্বাস কুমার রমেশ। তিনি বর্তমানে আহমেদাবাদের সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে, তাঁর আঘাত তুলনামূলকভাবে সামান্য এবং শিগগিরই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে।

নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্তকরণের কাজ চলছে। প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ জন আরোহীর মধ্যে অধিকাংশের মরদেহ পুড়ে চেনা কঠিন হয়ে যাওয়ায় ডিএনএ পরীক্ষাই একমাত্র ভরসা বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, যিনি হাসপাতালেও বিশ্বাস কুমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় মুখ্যমন্ত্রী জানান, বেঁচে যাওয়া যাত্রী স্বাভাবিক কথাবার্তা বলছেন এবং শারীরিকভাবেও স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন। দুর্ঘটনার পর নিজেই অ্যাম্বুলেন্সে উঠেছিলেন তিনি।

এই দুর্ঘটনায় ব্যবহৃত বিমানটি ছিল একটি বোয়িং ড্রিমলাইনার, যা প্রায় ১ লাখ লিটার জ্বালানি বহন করছিল। দুর্ঘটনার পরপরই আগুন ধরে গেলে পুরো এলাকা মুহূর্তে উত্তপ্ত হয়ে পড়ে এবং উদ্ধারকাজ চরমভাবে ব্যাহত হয়। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (NDRF) সদস্যরাও যথাযথভাবে উদ্ধারকাজ চালাতে পারেননি।

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং আগামী এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিমানটির ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার এবং ককপিট ভয়েস রেকর্ডার উদ্ধার করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

এ দুর্ঘটনায় কয়েকজন ব্রিটিশ নাগরিকও নিহত হয়েছেন। ফলে যুক্তরাজ্য সরকার তদন্তে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং বোয়িং কর্তৃপক্ষও তদন্তে অংশ নিতে চায় বলে জানা গেছে।

এদিকে, বিমানটি পরিচালনাকারী সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া (বর্তমানে টাটা গ্রুপের মালিকানাধীন) নিহত প্রত্যেক যাত্রীর পরিবারকে ১ কোটি রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আহতদের চিকিৎসা ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের আর্থিক সহায়তায় কেন্দ্রীয় সরকারও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।

ঘটনার পর গোটা দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধৈর্য ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

সুত্রঃ https://www.youtube.com/watch?v=epJ9qHOfVDc