ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

হানিমুনের রোমান্স থেকে রহস্যজনক মৃত্যু, স্ত্রীকে সন্দেহ করছে পুলিশ

প্রকাশিত: ১১:৩২, ১২ জুন ২০২৫

হানিমুনের রোমান্স থেকে রহস্যজনক মৃত্যু, স্ত্রীকে সন্দেহ করছে পুলিশ

ছবি: সংগৃহীত

মেঘালয়ের পুলিশ ইন্দোরের ব্যবসায়ী রাজা রঘুবংশী হত্যা মামলায় তার স্ত্রী সোনম রঘুবংশীকে জেরা করেছে। গত মাসে শিলংয়ে তাদের হানিমুন চলাকালে রাজার রহস্যজনক মৃত্যুর পর এই ঘটনা আলোচনায় এসেছে। দম্পতিটি শিলংয়ের ওয়াহেদার এলাকায় একটি রিসোর্টে থাকছিলেন, যেখানে ২৮ মে রাজার মৃতদেহ পাওয়া যায়। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, রাজার শরীরে বিষক্রিয়ার চিহ্ন পাওয়া গেছে এবং প্রাথমিকভাবে এটিকে হত্যা বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

সোনমকে গতকাল দীর্ঘ সাত ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে, তবে পুলিশ এখনও তার বিরুদ্ধে কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনে নি। মেঘালয় পুলিশের ডিআইজি প্রশান্ত সিং বলেন, "আমরা ঘটনার সব দিক খতিয়ে দেখছি। সোনমের জবানবন্দি গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু শুধুমাত্র সেটির উপর ভিত্তি করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না।" তিনি আরও যোগ করেন যে রাজার মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

রাজা রঘুবংশী ইন্দোরের একজন প্রতিষ্ঠিত রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ছিলেন এবং সম্প্রতি সোনমের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিবাহের আগে থেকেই দম্পতির সম্পর্কে টানাপোড়েন ছিল। রাজার পরিবার সোনমের বিরুদ্ধে সম্পত্তি নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছে, যদিও সোনমের আইনজীবী এসব অভিযোগকে "আধারহীন" বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এমন এক সাংবাদিক জানান, রিসোর্টের সিসিটিভি ফুটেজে রাজা ও সোনমের মধ্যে তর্কাতর্কি দেখা গেছে। তবে পুলিশ এখনও এই ফুটেজ সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। রাজার পোস্টমর্টেম রিপোর্টে "অজানা বিষ" এর উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে, কিন্তু সুনির্দিষ্ট বিষের ধরন জানতে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

ইন্দোরের রাজার পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, হানিমুনে যাওয়ার আগে রাজা সম্পত্তি নিয়ে নতুন কোনো উইল করেছিলেন কিনা তা তারা জানেন না। স্থানীয় আইনজীবী রাহুল শুক্লা বলেছেন, "যদি প্রমাণিত হয় যে বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে, তাহলে এটি একটি সুপরিকল্পিত অপরাধ বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে।"

মামলাটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং পুলিশ রাজার ব্যবসায়িক সম্পর্ক, আর্থিক লেনদেন ও সাম্প্রতিক যোগাযোগগুলি খতিয়ে দেখছে। মেঘালয় পুলিশ ইন্দোর পুলিশের সাথে সমন্বয় করে তদন্ত চালাচ্ছে। এই রহস্যজনক মৃত্যু মামলাটি শিলং ও ইন্দোর দুই জায়গাতেই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, যেখানে স্থানীয়রা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছে।

সাব্বির

×