
ছবি: সংগৃহীত
পশ্চিমা মিডিয়া যখন ভারত ও পাকিস্তানকে সামরিক ক্ষমতার দিক দিয়ে সমান বলে প্রচার চালাচ্ছে, তখন বাস্তবে ১০ মে সকালে পাকিস্তানের হৃদয়ে অবস্থিত নূর খান বিমানঘাঁটিতে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসলামাবাদ কার্যত যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ কামনা করে। একইসাথে ভারতীয় নৌবাহিনীর করাচি নৌঘাঁটিতে হামলার প্রস্তুতি ছিলো। রাওয়ালপিন্ডি হামলার পর মোদি সরকার সংঘর্ষ আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়, কারণ পাকিস্তান ভারতের মোকাবেলায় পুরোপুরি অক্ষম ছিলো, এমনটাই দাবি ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের। পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের চিত্র ছিল স্পষ্ট—১০ মে সকালে পাকিস্তানের আপৎকালীন অনুরোধে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মরিয়া প্রচেষ্টা ছিলো ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে ফোনে পাওয়ার জন্য।
ভোরে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্রে নূর খান বিমানঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে পাকিস্তানের সামরিক অপারেশনের মহাপরিচালক (ডিজিএমও) কাশিফ আব্দুল্লাহ সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ভারতীয় ডিজিএমওকে ফোন করেন এবং করাচি নৌঘাঁটিতে সম্ভাব্য ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র হামলার গোয়েন্দা তথ্য দেওয়ার দাবি করেন। যদিও তিনি পাল্টা হামলার হুমকি দেন, ভারতীয় পক্ষ ছিলো নিরুত্তাপ এবং সম্পূর্ণ যুদ্ধ প্রস্তুত। এ সময় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতির ইচ্ছা প্রকাশ করলে, জয়শঙ্কর স্পষ্টভাবে জানান, এমন প্রস্তাব সশস্ত্র বাহিনীর চ্যানেলের মাধ্যমেই আসতে হবে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইসলামাবাদের মিত্রদের ফোন উপেক্ষা করে ভারত অভিযান চালিয়ে যেতে থাকে।
ফরাসি মিডিয়া ও অন্যান্য পশ্চিমা প্রচারমাধ্যম যখন চীনা অস্ত্র ব্যবস্থাকে ভারতের চেয়ে উন্নত বলে দাবি করে, মোদি সরকার ছিলো পুরোপুরি প্রস্তুত। ১১টি বিমানঘাঁটির দমন এবং পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা সম্পূর্ণ নিস্ক্রিয় করার পর সিন্ধু নদের পূর্বে পাকিস্তানের প্রায় কোনো সামরিক লক্ষ্যই অবশিষ্ট ছিল না। বেলুচিস্তান কিংবা খাইবার পাখতুনখাওয়ায় হামলা না চালিয়ে, ভারত ৭ মে সকালের মধ্যে মাত্র ২৫ মিনিটেই সন্ত্রাসবিরোধী অবকাঠামো ধ্বংস করে মিশন সম্পন্ন করে। পাকিস্তানের পাল্টা জবাব দেওয়ার ক্ষমতা নিস্ক্রিয় করেই ভারত সংঘর্ষ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
ফরাসি রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার রাফালে যুদ্ধবিমান নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা সত্ত্বেও ভারতীয় বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং ঘুরে বেড়ানো অস্ত্র অসাধারণভাবে সফল হয়। ১০ মে’র হামলার পর পাকিস্তানের চীনা সাপ্লাইকৃত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস বা জ্যাম করে দেওয়ায়, ভারত তখনো পাকিস্তানের যেকোনো লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর ক্ষমতা রাখে। ভারত সংঘর্ষ থামানোর সিদ্ধান্ত নেয় কৌশলগত কারণেই—মিশন লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে, আর বাড়তি হামলা পাকিস্তানকে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে ‘ভিকটিম’ হিসেবে তুলে ধরার সুযোগ দিত।
চীন ও তুরস্কের সামরিক উপদেষ্টারা পাকিস্তানকে যেভাবে সহায়তা করেছে, বিশেষ করে পেহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পর, ভারত প্রত্যাশিতভাবেই তাদের বিরুদ্ধেও পাল্টা পদক্ষেপ নেবে। মোদি সরকার বর্তমানে দূরপাল্লার অস্ত্র এবং ড্রোন প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, কারণ ঐতিহ্যগত স্থলযুদ্ধের যুগ প্রায় শেষ। ২০২৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র নির্মিত ৩১টি সশস্ত্র প্রিডেটর ড্রোন ভারতীয় বাহিনীতে যুক্ত হতে যাচ্ছে। পাশাপাশি ভারত উচ্চতর সশস্ত্র ড্রোন ও স্বল্পমূল্যের ঝাঁক ড্রোন তৈরি করছে—যেগুলো পাকিস্তান ইতোমধ্যেই সীমান্তে মোতায়েন করেছে।
আগামী মাসে ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু নদ চুক্তি স্থগিত করার সম্ভাব্য ধাক্কা পাকিস্তান স্পষ্টভাবেই টের পাবে। ‘অপারেশন সিঁদুর’ ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা—নিজের উপরই নির্ভর করতে হবে। প্রতিবেশী এবং পশ্চিমা প্রতিপক্ষদের মোকাবিলার জন্য ভারতের নিজস্ব সামগ্রিক সামরিক সক্ষমতা গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।
সূত্র: https://www.hindustantimes.com/india-news/india-was-ready-for-round-ii-pak-begged-us-for-intervention-after-operation-sindoor-101747540885978.html
এএইচএ