ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫, ৩১ চৈত্র ১৪৩২

শেয়ারবাজারে ধুঁকছে দাসো এভিয়েশন, চীনা যুদ্ধবিমানের কাছে হারই হলো কাল!

প্রকাশিত: ২২:৪০, ১৪ মে ২০২৫; আপডেট: ২২:৪৩, ১৪ মে ২০২৫

শেয়ারবাজারে ধুঁকছে দাসো এভিয়েশন, চীনা যুদ্ধবিমানের কাছে হারই হলো কাল!

ছবি: প্রতীকী

রাফাল, মিরাজসহ একাধিক অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান নির্মাতা ফ্রান্সের বিখ্যাত প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান দাসো এভিয়েশন সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রে। ১৯২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিটি ৪.৫ জেনারেশন পর্যন্ত উন্নত যুদ্ধবিমান তৈরি করে থাকে। বর্তমানে মনুষ্যবিহীন ‘নিউরন’ প্রকল্পেও কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

তবে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাম্প্রতিক সংঘর্ষে তিনটি রাফাল যুদ্ধবিমানের ভূপাতিত হওয়ার ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েছে দাসো এভিয়েশন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এতো আধুনিক প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও রাফালের এ ব্যর্থতা প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তিকে নাড়িয়ে দিয়েছে।

প্রতিটি রাফালের বাজারমূল্য প্রায় ১২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, আর এসব বিমান শব্দের চেয়েও ১.৮ গুণ গতিতে চলতে পারে। নকশা ও বৈশিষ্ট্যে এটি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ফাইটার জেট, যা সর্বোচ্চ ৫০০ ফুট উচ্চতায়ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে এবং একসঙ্গে ১৪৫ কিলোমিটারের মধ্যে ৪০টি লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করতে সক্ষম।

তবুও এই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর কাছে পর্যুদস্ত হয়েছে বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা দাসো এভিয়েশনের জন্য কার্যত কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘মিন্ট’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র এই এক ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারমূল্যে ব্যাপক ধস নেমেছে। গত পাঁচ কার্যদিবসে দাসোর শেয়ার মূল্য ১০ শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়েছে। শুধু সোমবারই (১২ মে) ইউরোপীয় শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ার ৭ শতাংশের বেশি পড়ে যায়। প্যারিস স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানিটির শেয়ার নেমে এসেছে ২৯২ ডলারে। অথচ গত পাঁচ বছরে শেয়ারটির মূল্য ৩৪৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। শুধুমাত্র গত বছরেই দাসো এভিয়েশন ৬.২৪ বিলিয়ন ইউরোর বিক্রি এবং ৯২৪ মিলিয়ন ইউরো নিট মুনাফা অর্জন করেছিল।

বিশ্লেষকদের মতে, ভারত-পাকিস্তান ইস্যুকে ঘিরে চলমান অস্থিরতা এবং রাফালের কার্যকারিতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠায় প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার আরও পড়ে গিয়ে ২৬০ ইউরো পর্যন্ত নেমে যেতে পারে। ফলে এখন দাসো এভিয়েশনের শেয়ারে বিনিয়োগ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে, দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি এখন একটি ঝুঁকিপূর্ণ সময়।

অন্যদিকে, রাফাল যুদ্ধবিমানকে যেসব ফাইটার জেট ভূপাতিত করেছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই চীনের তৈরি জেট। বিশেষ করে জে-১০সি সিরিজের ফাইটার জেটের কথা উঠে এসেছে সামরিক সূত্রে। এই ঘটনাগুলোর পর থেকেই রাফালের বিরুদ্ধে এবং চীনা যুদ্ধবিমানের পক্ষে একটি বিশ্বাসযোগ্যতা গড়ে উঠেছে। এর ফলে চীনের ফাইটার জেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘চেংডু এয়ারক্রাফ্ট কর্পোরেশন’-এর শেয়ারবাজারে এক লাফে বেড়ে যায় শেয়ারের দাম। সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৭১.৮ ইউয়ানে, যা একদিনের ব্যবধানে ১৮ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি।

এই ঘটনার মাধ্যমে যুদ্ধবিমান বাজারে চীনা জেটের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে গেছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। বিপরীতে, রাফাল বহর নিয়ে ভারতীয় বিমান বাহিনীও যেন পড়েছে গভীর বিপাকে।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=1WW-DU83-Ds

রাকিব

×