ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোমিটার গতির নতুন ট্রেন “হুশ”

প্রকাশিত: ২১:১৯, ২ অক্টোবর ২০২৩

ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোমিটার গতির নতুন ট্রেন “হুশ”

দ্রুত গতির ট্রেন ‘হুশ’

চীনের অর্থায়নে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রথমবারের মতো সর্বোচ্চ গতির রেল পরিষেবা চালু করেছে ইন্দোনেশিয়া।

সোমবার (২ অক্টোবর) প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো এটির উদ্বোধন করেন। ৭.৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে “হুশ” নামে ১৪০ কিলোমিটার দূরত্বের এই রেলপথ রাজধানী জাকার্তার সঙ্গে শীর্ষ অর্থনৈতিক কেন্দ্র বান্দুংয়ের সংযোগ করবে। ১৪০ কিলোমিটার দূরত্বের এই পথ পাড়ি দিতে আগে সময় লাগত প্রায় তিন ঘণ্টা। তবে এখন থেকে এই দুই নগরীর মধ্যে চলাচলে বুলেট ট্রেনের সময় লাগবে মাত্র ৪৫ মিনিট।

এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ইন্দোনেশিয়ায় যানজট কমানো বলে জানান প্রেসিডেন্ট উইদোদো। ২০১৯ সালে এই প্রকল্প চালুর কথা ছিল। তবে জমি সংক্রান্ত বিরোধ, কোভিড-১৯ মহামারি ও বাজেট ঘাটতির কারণে এটি চালু করতে দেরি হয়। রবিবার রেলপথটি চালুর কথা থাকলেও প্রেসিডেন্টের সময়সূচির কারণে এটি একদিন পিছিয়ে সোমবার থেকে চালু হয়।

বেইজিংয়ের চায়না রেলওয়ে ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার চারটি রাষ্ট্রীয় কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে এই পরিষেবা পরিচালিত হবে। প্রেসিডেন্ট উইদোদো বলেন, “দ্রুতগতির ট্রেনের শব্দ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই নাম রাখা হয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তারা জানান, নতুন চালু হওয়া এই রেলপথ দেশের অর্থনৈতিক উৎপাদন বৃদ্ধি করবে। এই পথে বিদ্যুৎচালিত ট্রেন চলাচল করবে। ফলে এটি কার্বন হ্রাসেও ভূমিকা রাখবে। পশ্চিম জাভা প্রদেশের রাজধানী বান্দুংকে ইন্দোনেশিয়ার সিলিকন ভ্যালি বলে অভিহিত করা হয়।

কৌশলগত উপদেষ্টা সংস্থা গ্লোবাল কাউন্সিলের ইন্দোনেশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক দেদি দিনার্টোর মতে, “বুলেট ট্রেনের গতি মূলত ব্যবসায়ী ভ্রমণকারী এবং পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে।”

তিনি বলেন, “এটি জাতীয় বাজেট ও চীনা অর্থায়নে করা হয়েছে। তবে এই অবকাঠামো বিনিয়োগ সরকারের জন্য লাভজনক হবে কী-না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।”

রেলপথে চলাচলের বুলেট ট্রেনের টিকিটের দাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে পরিচালনা প্রতিষ্ঠানের সূত্র বলছে, একবার যাত্রায় টিকেটের দাম হতে পারে ২৫০,০০০ থেকে ৩৫০,০০০ ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়া (১৬-২২.৬০ ডলার)।

যদিও ওই অঞ্চলে চলাচলের ক্ষেত্রে শাটল বাসের ভাড়া মাত্র পাঁচ ডলার (৭৭,৬৮৫ ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়া)। ফলে ট্রেনে কারা যাতায়াত করবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা উঠেছে।

বান্দুংয়ের বাসিন্দা অনিন্দা দেবায়ন্তি বলেন, “ট্রেনটি সাধারণ ইন্দোনেশিয়ানদের জন্য কতটা ব্যবহার উপযোগী হবে তা নিয়ে সন্দিহান।”

তিনি বলেন, “এটি অনেক ব্যয়বহুল। তুলনামূলক ভাড়া হিসেব করলে আরও বিকল্প সেবা আছে। আমি তো সাধারণ ট্রেন বা বাসে যেতে চাই।” তবে এই রেলপথ নিয়ে উচ্ছ্বাসও প্রকাশ করেছেন অনেকেই। জাকার্তায় বসবাসকারী ২৩ বছর বয়সী অ্যামেলিয়া রহিমা বলেন, “আশা করি অনেকেই এই সেবা নেবেন।”

দশ বছর আগে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নেওয়া বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পের আওতায় ইন্দোনেশিয়ায় এই প্রকল্প চালু হলো। এই প্রকল্পের আওতায় স্থল ও সমুদ্র পথের মাধ্যমে এশিয়াকে আফ্রিকা এবং ইউরোপের সঙ্গে যুক্ত করা হবে।

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ইন্দোনেশিয়া সক্রিয়ভাবে নিজের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার চীনের কাছ থেকে বিনিয়োগ চাইছে। তারই উদ্যোগে এই প্রকল্পটি চালু হলো।

 

এস

আরো পড়ুন  

×