ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত ভারত

প্রকাশিত: ১৮:১২, ১০ জুলাই ২০২৩; আপডেট: ১৮:২১, ১০ জুলাই ২০২৩

প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত ভারত

বৃষ্টির কারণে জলমগ্ন বহু এলাকা ৷

প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তর ভারত ৷ বৃষ্টির কারণে উত্তরের রাজ্যগুলিতে কমপক্ষে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ ভূমিধসের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট ৷ জলমগ্ন বহু এলাকা ৷ 

নদীগুলি ফুলে ফেঁপে ওঠায় ভেসে গিয়েছে সেতু ৷ হিমাচল এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম ৷ পাহাড়ি রাজ্যে ভূমিধসে একাধিক বাড়ি এবং অন্যান্য নির্মাণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অন্তত পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছেন। উত্তরাখণ্ডে একটি গাড়ি ভূমিধসে ধাক্কা খেয়ে গঙ্গায় ডুবে যাওয়ায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।জম্মু ও কাশ্মীরে শনিবার সন্ধ্যায় পুঞ্চ জেলায় হড়পা বানে ভেসে গিয়ে দুই সেনা জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে ৷ 

রাজস্থানের বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে ৷ যার ফলে শনিবার পৃথক ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। চিতোরগড়ে বজ্রপাতে একজন পুরুষ ও একজন মহিলার মৃত্যু হয়েছে এবং সাওয়াই মাধোপুরে দুটি পৃথক ঘটনায় দুই ব্যক্তি ডুবে গিয়েছেন। ভারতীয় আবহাওয়া দফতর দিল্লি, হরিয়ানা, হিমাচলপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান,পঞ্জাব এবং জম্মু ও কাশ্মীরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। তারই ফলে শনিবার এবং রবিবার তীব্র বৃষ্টিপাত হয়েছে।

১০-১৩ জুলাই পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশে বিচ্ছিন্ন ভারী থেকে খুব ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে ৷ হিমাচলপ্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ভূমিধস হয়েছে, ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পাঁচজন নিহত হয়েছেন ৷ সিমলা জেলার কোটগড় এলাকায় বৃষ্টির কারণে ভূমিধসে বাড়ি ধসে এক পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। কুলু শহরের কাছে একটি ভূমিধসে একটি অস্থায়ী বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এতে একজন মহিলার মৃত্যু হয়। অন্য একটি ঘটনায়, শনিবার রাতে চাম্বার কাতিয়ান তহসিলে ভূমিধসের ফলে একজন জীবন্ত অবস্থায় মাটি চাপা পড়েন ৷ রাজ্য জরুরি অপারেশন সেন্টার অনুসারে, গত ৩৬ ঘণ্টায় রাজ্যে ১৩টি ভূমিধস এবং নয়টি হড়পা বানের খবর পাওয়া গিয়েছে।

রবিবার সকালে ৭৩৬টি রাস্তা যান চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং ১৭৪৩টি ট্রান্সফরমার এবং ১৩৮টি জল সরবরাহ প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২১নং জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ। এটা সেই জায়গা যেখানে গত ২৭জুন ভূমিধসের কারণে প্রায় ২৪ ঘণ্টা যাত্রীরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। ঘোডা ফার্মের কাছে কামান্দ হয়ে মান্ডি-কুলু সড়কও অবরুদ্ধ করা হয়েছে। 

কিন্নর ও চাম্বার নল্লায় আকস্মিক বন্যায় যানবাহন ভেসে গিয়েছে এবং কৃষি জমির ক্ষতি হয়েছে। সিমলা জেলায় বেশ কয়েকটি রাস্তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিপাশা, শতদ্রু-সহ সমস্ত প্রধান নদীগুলি ফুলে ফেঁপে উঠেছে ৷ পর্যটক ও যাত্রীদের ভারী বৃষ্টির সময় ভ্রমণ এড়াতে এবং নদীর ধারের কাছে বের না হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ইউনেস্কোর ঐতিহ্যবাহী সিমলা এবং কালকা ট্র্যাকের মধ্যে সমস্ত ট্রেন বাতিল করা হয়েছে, কারণ ভূমিধস এবং গাছপালা পড়ে অনেক জায়গায় রেলপথ অবরুদ্ধ হয়েছে। 

গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস ৮ এবং ৯ জুলাই রাজ্যের সাতটি জেলায় অত্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের (২০৪ মিমি উপরে) একটি লাল সতর্কতা জারি করেছিল। সিমলা, সিরমাউর, মান্ডি, চাম্বা, কাংরা, কুলু- এর কয়েকটি জলাশয়ে উচ্চ আকস্মিক বন্যার ঝুঁকির বিষয়েও সতর্ক করেছে।

রাজু

সম্পর্কিত বিষয়:

×