ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৯ আগস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২

সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের অবদান জাতি চিরদিন স্মরণ করবে: স্পিকার

প্রকাশিত: ২০:৪০, ১৯ মে ২০২৩; আপডেট: ২০:৪১, ১৯ মে ২০২৩

সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের  অবদান জাতি  চিরদিন স্মরণ করবে: স্পিকার

ছবি: সংগৃহীত।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের অবদান জাতি গভীর শ্রদ্ধাভরে চিরদিন স্মরণ করবে। তিনি ছিলেন বহুবিধ জ্ঞান, প্রজ্ঞা, মানবিক মূল্যবোধ এবং বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী। 

শুক্রবার (১৯ মে)  ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে ‘কিংবদন্তি আবুল মাল আবদুল মুহিত’ স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। 

এসময় স্পিকার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্ব ও দূরদর্শী নির্দেশনায় দেশের অভাবনীয় উন্নয়ন ঘটছে। অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে আবুল মাল আবদুল মুহিত সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সুষ্ঠুভাবে সকল দায়িত্ব পালন করেছেন। বার্ষিক বাজেটেও তিনি জনকল্যাণমূলক অসংখ্য প্রস্তাব গ্রহণে সর্বদা সচেষ্ট ছিলেন। স্পিকার বলেন, দারিদ্র্যের হার হ্রাস, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে নারী জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন ভাতা চালু করা, ক্ষুদ্র ও নারী উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিতকরণে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আবদুল মুহিত সার্বক্ষণিক কাজ করে গেছেন। দেশের অর্থনীতিতে জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমেই দেশের সার্বিক উন্নয়ন নির্ভর করে এই মন্ত্রে তিনি বিশ্বাসী ছিলেন।

তিনি বলেন, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সিভিল সার্ভিসে যোগদান করে দেশ সেবার সুযোগ লাভ করার পর এই অনন্য প্রতিভাধর মানুষটি ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত থাকাকালীন বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন করেন। এ কারণে তাকে ২০১৬ সালে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক’ প্রদান করা হয়। তিনি মোট ১১ বার এবং টানা ৯ বার বাজেট উপস্থাপন করেছেন। সাবেক অর্থমন্ত্রী সিলেটকে সর্বদা ভালোবেসেছেন এবং কর্মময় জীবনের বিভিন্ন সময়ে সিলেটের প্রতি তার গভীর অনুরাগ প্রকাশ করেছেন।

এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, দেশবরেণ্য অর্থনীতিবিদ, বিশিষ্ট কূটনীতিবিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ছিলেন বাংলাদেশে পরিবেশ আন্দোলনের একজন পথপ্রদর্শক। তিনি ছিলেন বাপা’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। 

এর আগে তিনি ‘পরশ’ নামে একটি পরিবেশবাদী গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন উল্লেখ করে মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, তার মতো সবাই পরিবেশ সচেতন হলে দেশের সার্বিক পরিবেশের উন্নয়ন হবে। তিনি ক্রীড়াক্ষেত্রেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত অসামান্য প্রতিভাবান মুহিত সাহেব ছিলেন দেশের একজন সত্যিকারের কিংবদন্তি। 

শাহাব উদ্দিন বলেন, দীর্ঘকাল অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী সিলেটের এই কৃতী সন্তান তার সময়োপযোগী প্রাজ্ঞ কর্মপরিকল্পনা ও সিদ্ধান্তে একটি দৃঢ় ভিত্তির অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী দেশের এই কৃতী সন্তান তার সুদীর্ঘ এবং বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, জনসেবা এবং গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্মরণীয় অবদান রেখেছেন। তিনি পাকিস্তানের ওয়াশিংটন দূতাবাসের প্রথম কূটনীতিক যিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি তার আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি আরও বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, জাতীয় অধ্যাপক ও সাবেক অর্থমন্ত্রীর বোন ডা. শাহলা খাতুন, মেডিকেল রিসার্স কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছির আলী, প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ।

এমএম

×