
ছবি: সংগৃহীত
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দেশটির অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কোকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুপারিশ করেছেন। সোমবার জেলেনস্কি নিজেই এই ঘোষণা দিয়েছেন, যা রাশিয়ার সঙ্গে সাড়ে তিন বছরের যুদ্ধে বিপর্যস্ত ইউক্রেনের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি বড় ধরনের রদবদলের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, "আমি ইউক্রেন সরকারকে নেতৃত্ব দিতে এবং এর কার্যক্রম নতুন করে শুরু করতে ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কোর নাম প্রস্তাব করেছি। শিগগিরই নতুন সরকারের কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপনের অপেক্ষায় আছি আমি।" জেলেনস্কি তার এই সুপারিশকে ইউক্রেন সরকারের 'কার্যনির্বাহী শাখার রূপান্তর' প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি আরও জানান, তিনি এবং সিভিরিদেঙ্কো ইউক্রেনের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ানো, নাগরিকদের জন্য সহায়তা কর্মসূচি সম্প্রসারণ এবং দেশীয় অস্ত্র উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
৩৯ বছর বয়সী ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কো চলতি বছর বিরল খনিজ-সংক্রান্ত চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে টানাপোড়েনের সময় আলোচনায় আসেন। সে সময় কিয়েভ ও তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক মিত্র ওয়াশিংটনের সম্পর্ক অনেকটাই ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে পড়েছিল। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়া পুরোদমে হামলা শুরু করার কয়েক মাস আগে তিনি ইউক্রেনের সংকটাপন্ন অর্থনীতি পরিচালনার দায়িত্বে নিযুক্ত হন এবং বর্তমানে তিনি ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
জেলেনস্কির এই প্রস্তাব অনুমোদন পেলে ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কো ২০২০ সাল থেকে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা ডেনিস শ্যামিহালের স্থলাভিষিক্ত হবেন। রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে ইউক্রেনের পার্লামেন্টের একটি বড় অংশই জেলেনস্কির পাশে আছে, তাই এবারও তারা প্রেসিডেন্টের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে যাবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
সিভিরিদেঙ্কোর একসময়ের সহকর্মী ও ইউক্রেনের সাবেক অর্থমন্ত্রী তিমোফি মাইলোভানভ, যিনি বর্তমানে কিয়েভ স্কুল অব ইকোনমিকসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, বলেছেন যে সরকারে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন কারণ মানুষ 'হাঁপিয়ে উঠেছে'। তার মতে, তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে এই পরিবর্তনগুলো নতুন উদ্যম তৈরি করবে।
এর আগে গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেছিলেন, তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভকে ওয়াশিংটনে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত করার কথা বিবেচনা করছেন। সপ্তাহের শেষে রুস্তেম উমেরভের সঙ্গে সাক্ষাতের পর জেলেনস্কি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউক্রেনের সম্পর্ক আরও ইতিবাচকভাবে এগিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি দেশের প্রতিরক্ষা খাত পরিচালনায় নতুন পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
সাব্বির