
ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৩ লাখ মানুষ হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবেই, হার্ট অ্যাটাকের জেরেই এখন বাংলাদেশের মৃত্যুর হার সবথেকে বেশি। এর থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশুরাও। অথচ চিকিৎসকরা বলছেন, সময়মতো সতর্ক হলে এবং শরীরের কিছু ছোট ছোট সংকেতকে গুরুত্ব দিলে এই বিপদ অনেকটাই এড়ানো সম্ভব। হার্ট অ্যাটাক হঠাৎ হয় না—এর আগে শরীর বারবার সংকেত দেয়। সেগুলো চিনতে পারলেই জীবন রক্ষা করা সম্ভব।
চলুন জেনে নিই এমন ৭টি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত, যেগুলো হার্ট অ্যাটাকের আগাম বার্তা দিতে পারে:
১. বুকের মাঝখানে চাপ বা ব্যথা
শরীরচর্চা বা বিশ্রামের সময় হঠাৎ বুকের মাঝখানে চাপ অনুভব হলে সতর্ক হোন। অনেক সময় এটি জ্বালাপোড়া বা ভারী কিছু চেপে বসার মতো অনুভূতি দেয়।
২. বাম হাতে ব্যথা ছড়ানো
হার্টের সমস্যার কারণে ব্যথা ধীরে ধীরে বাম কাঁধ ও হাতে ছড়িয়ে পড়ে। কখনও ডান হাতেও ব্যথা হতে পারে, তবে বাম দিকের ব্যথা বেশি সাধারণ।
৩. হঠাৎ ঘাম হওয়া (ঠান্ডা ঘাম)
ব্যায়াম না করেও হঠাৎ শরীর ঘেমে গেলে এটি হার্টের অস্বাভাবিকতা বোঝাতে পারে। বিশেষত যদি ঘাম হয় মুখে, ঘাড়ে বা বুকে।
৪. শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
ছোট্ট কাজ করলেও যদি হাঁপিয়ে যান, নিঃশ্বাসে কষ্ট হয়, তাহলে এটি হার্ট পাম্পে সমস্যা নির্দেশ করতে পারে।
৫. অবসাদ বা দুর্বলতা অনুভব করা
সাধারণত যেসব কাজ করতে পারতেন, সেগুলোর সময় হঠাৎ ক্লান্তি বা দুর্বলতা বোধ করলে সেটি হার্টের সিগন্যাল হতে পারে।
৬. বমি ভাব বা পেটের সমস্যা
অনেকে হার্ট অ্যাটাকের আগে হঠাৎ গ্যাস্ট্রিক, বমি বমি ভাব বা পেটে অস্বস্তি অনুভব করেন। এটিকে খাবারের সমস্যা ভেবে অবহেলা করবেন না।
৭. চোখে ঝাপসা দেখা বা মাথা ঘোরা
মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমে গেলে চোখে অন্ধকার দেখা, মাথা ঘোরা শুরু হয়। এটি হার্ট ব্লক বা রক্তচাপ হঠাৎ কমে যাওয়ার লক্ষণ হতে পারে।
🔴 বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন:
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আসিফ রহমান বলেন, “এই লক্ষণগুলো অনেক সময় একসঙ্গে না-ও দেখা দিতে পারে। কিন্তু একাধিক লক্ষণ দেখা দিলেই দেরি না করে দ্রুত ইসিজি ও হার্ট চেকআপ করাতে হবে।”
✅ প্রতিরোধে করণীয়:
🔹 রক্তচাপ, রক্তে চর্বি এবং চিনির মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করুন
🔹 ধূমপান ত্যাগ করুন
🔹 পর্যাপ্ত পানি পান ও হাঁটা চালু রাখুন
🔹 মানসিক চাপ কমান
🔹 নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন
শরীর কখনো হঠাৎ বিপদে পড়ে না। বরং আগেভাগে আমাদের জানিয়ে দেয়। সে সংকেতগুলোকে অবহেলা না করে গুরুত্ব দিন। হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধযোগ্য—শুধু সচেতন থাকলেই সম্ভব।
Mily