
ছবি: সংগৃহীত
দাঁতের চিকিৎসায় ক্রাউন বা ক্যাপ বসানো একটি সাধারণ ও কার্যকর পদ্ধতি। তবে অনেক সময় দেখা যায়, চিকিৎসা নেওয়ার কিছুদিন বা কিছু মাস পর সেই ক্যাপ খুলে পড়ে যায়। এতে রোগী ভোগান্তির পাশাপাশি পুনরায় চিকিৎসা গ্রহণে বাধ্য হন। চিকিৎসকদের মতে, বেশ কিছু সাধারণ কারণেই দাঁতের ক্যাপ খুলে যেতে পারে।
ক্যাপ খুলে যাওয়ার সাধারণ কারণগুলো:
1. দাঁত ঘষা বা দাঁত কিড়মিড় করার অভ্যাস (Bruxism):
রাতে ঘুমের সময় অনেকে অজান্তেই দাঁত চেপে ধরেন বা ঘষেন। এই অভ্যাস দাঁতের ক্যাপের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, ফলে ক্যাপ আলগা হয়ে যেতে পারে।
2. চিবানোর সময় অতিরিক্ত চাপ বা শক্ত খাবার খাওয়া:
শক্ত বাদাম, বরফ, কাঁচা চাল, পেন ঢাকনা ইত্যাদি চিবালে ক্যাপের বন্ডিং দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ধীরে ধীরে তা খুলে যেতে পারে।
3. সঠিকভাবে ফিট না হওয়া ক্যাপ:
ক্যাপ যদি ঠিকভাবে বসানো না হয় বা দাঁতের আকার অনুযায়ী ঠিকমতো তৈরি না হয়, তাহলে তা স্থায়ীভাবে বসে না এবং একসময় খুলে পড়ে।
4. আঠার (cement) মান খারাপ হওয়া বা সময়ের সঙ্গে দুর্বল হয়ে যাওয়া:
দাঁতের ক্যাপ লাগানোর সময় ব্যবহার করা বন্ডিং সিমেন্ট ভালো মানের না হলে বা বয়সজনিত কারণে দুর্বল হয়ে গেলে ক্যাপ আলগা হয়ে যেতে পারে।
5. মাড়ির ইনফেকশন বা দাঁতের ভেতরে ক্ষয়:
দাঁতের ক্যাপ বসানোর পর যদি মূল দাঁতে পোকা ধরে বা মাড়িতে ইনফেকশন হয়, তাহলে ক্যাপের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলে তা খুলে যেতে বাধ্য হয়।
6. অযত্ন ও নিয়মিত চেকআপের অভাব:
ক্যাপ বসানোর পর নিয়মিত ডেন্টাল চেকআপ না করলে বা মুখগহ্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না রাখলে ক্যাপের স্থায়িত্ব কমে যায়।
ক্যাপ খুলে যাওয়া প্রতিরোধে করণীয়:
* রাতে ঘুমানোর সময় ব্রুক্সিজম থাকলে নাইট গার্ড ব্যবহার করা উচিত
* শক্ত ও আঠালো খাবার এড়িয়ে চলুন
* ক্যাপ বসানোর পর নিয়মিত ডেন্টাল চেকআপ করুন
* প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ ও ফ্লস করে মুখগহ্বর পরিষ্কার রাখুন
* কোনো অস্বস্তি বা নড়াচড়া টের পেলেই দ্রুত ডেন্টিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করুন
দাঁতের ক্যাপ সঠিকভাবে বসালে তা ৫ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত ভালো থাকতে পারে। তাই চিকিৎসার মান ও নিজের যত্ন—উভয়ের উপরেই নির্ভর করে ক্যাপের স্থায়িত্ব।
ছামিয়া