ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২

যে কারণে হঠাৎ কিডনি বিকল হতে পারে

প্রকাশিত: ১৪:১৩, ২১ জুলাই ২০২৫

যে কারণে হঠাৎ কিডনি বিকল হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত।

হঠাৎ করেই একজন সুস্থ মানুষের কিডনি কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে—এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি চিকিৎসা বিজ্ঞানে পরিচিত 'অ্যাকিউট কিডনি ইনজুরি' (Acute Kidney Injury) নামে। এই ধরনের কিডনি বিকলতা দ্রুত চিকিৎসা না পেলে প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।

চিকিৎসকদের মতে, হঠাৎ কিডনি বিকলের পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে প্রধান হল রক্তচাপের হঠাৎ অতিরিক্ত হ্রাস, ডিহাইড্রেশন, মারাত্মক ইনফেকশন, অতিরিক্ত ওষুধ সেবন, অথবা শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমে যাওয়া।

কী কী কারণে হঠাৎ কিডনি বিকল হতে পারে?
১. অতিরিক্ত ডিহাইড্রেশন: শরীরে পানির ঘাটতি হলে কিডনিতে রক্ত প্রবাহ কমে যায়। এতে কিডনি ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।

২. রক্তচাপের হঠাৎ পতন: দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বা হার্ট অ্যাটাকের ফলে রক্তচাপ দ্রুত কমে গেলে কিডনিতে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়, যা কিডনির কার্যক্ষমতা হঠাৎ নষ্ট করে দিতে পারে।

৩. সেপসিস বা ইনফেকশন: রক্তে মারাত্মক ইনফেকশন ছড়ালে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এই অবস্থাকে বলা হয় সেপটিক শক।

৪. নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ: দীর্ঘদিন বা মাত্রাতিরিক্ত মাত্রায় ব্যথানাশক, অ্যান্টিবায়োটিক বা ক্যানসারের ওষুধ সেবনের ফলে কিডনি হঠাৎ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

৫. মায়োগ্লোবিন নামক প্রোটিনের অতিরিক্ত নির্গমন: দুর্ঘটনায় পেশির ক্ষত হলে এই প্রোটিন রক্তে মিশে কিডনির ক্ষতি করে।

হঠাৎ কিডনি বিকলের লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম হল- প্রস্রাবের পরিমাণ হঠাৎ কমে যাওয়া বা বন্ধ হয়ে যাওয়া, চোখ মুখ ফুলে যাওয়া, বমি বমি ভাব, বমি, ক্লান্তি, অস্পষ্ট চিন্তাভাবনা, শ্বাসকষ্ট, অস্বাভাবিক রক্তচাপ।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, হঠাৎ কিডনি বিকল রোধে সতর্কতা ও দ্রুত চিকিৎসা খুব জরুরি। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, বা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত রোগীদের নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সন্দেহজনক উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া প্রয়োজন।

কিডনি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, পর্যাপ্ত পানি পান, ওষুধ সেবনে সতর্কতা, ইনফেকশন প্রতিরোধ এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা কিডনি সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অতিরিক্ত ব্যথানাশক সেবন বা নিজে নিজে ওষুধ পরিবর্তন কখনওই উচিত নয়।

মিরাজ খান

×