ছবি: সংগৃহীত
সকালের নাস্তা দিনটিকে সুন্দরভাবে শুরু করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায়। কিন্তু ভুলভাবে নাস্তা করা, যেমন নাস্তা না করা, অতিরিক্ত খাওয়া বা ভুল খাবার নির্বাচন করা, পুরো দিনের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এতে শরীরে শক্তির ঘাটতি, মনোযোগের অভাব এবং মুড সুইংস হতে পারে।
একটি সঠিক ও পরিমিত সকালের নাস্তা — যা প্রোটিন, ফাইবার ও স্বাস্থ্যকর চর্বিতে সমৃদ্ধ — আমাদের বিপাকক্রিয়া সক্রিয় রাখে, রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়। তাই দিনটা কেমন যাবে, সেটা অনেকটাই নির্ভর করে আপনি সকালের নাস্তার জন্য কী বেছে নিচ্ছেন তার উপর।
ইনস্টাগ্রামে ডা. হেত প্যাটেল জানিয়েছেন, “আপনার নাস্তা যতই হালকা ও স্বাস্থ্যকর মনে হোক না কেন, সেটি গোপনে আপনার হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করছে।” চলুন দেখে নেই সেই পাঁচটি খাবার যা আমরা সকালের নাস্তায় খাই বলে মনে করি ভালো, কিন্তু বাস্তবে তা আমাদের শরীরের ক্ষতি করছে।
১. দুধ দিয়ে সিরিয়াল
সকালে তাড়াহুড়োতে অনেকেই দুধের সাথে সিরিয়াল (গম, ভুট্টা, ওটস, চাল বা বার্লির মতো শস্য দিয়ে তৈরি একটি প্রক্রিয়াজাত শুকনো খাবার) খেয়ে থাকেন। এটি সহজ, দ্রুত এবং স্বাস্থ্যকর বলে মনে হলেও আসলে এটি উচ্চমাত্রায় চিনি রয়েছে, প্রোটিনের পরিমাণ কম এবং শরীরে ইনসুলিন বাড়িয়ে দেয়, ফলে দ্রুত শক্তি ফুরিয়ে যায়।
পরিবর্তে: নিজে হাতে বানানো গ্র্যানোলা খান, যার সঙ্গে আপনার পছন্দের বাদাম ও বীজ মিশিয়ে নিতে পারেন। সঙ্গে গ্রিক দই যোগ করলে রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ ভালো থাকে।
২. ফলের রস ও টোস্ট
শুনতে হালকা মনে হলেও এটি একেবারে চিনির আধার। এতে না আছে প্রোটিন, না আছে ফাইবার—ফলে শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ দ্রুত বেড়ে যায়।
পরিবর্তে: পুরো একটি ফল খান যাতে ফাইবার থাকে এবং সঙ্গে বাদামের মাখন দেওয়া টোস্ট বা ডিম রাখতে পারেন। এটি আপনাকে দিনভর চনমনে রাখবে এবং শরীর হালকা অনুভব করবে।
৩. স্যান্ডউইচ
সাধারণত স্যান্ডউইচ তৈরিতে পরিশোধিত ময়দার রুটি ব্যবহৃত হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এর সঙ্গে যদি প্রসেসড মাংস বা ফিলিং থাকে, তাহলে এটি শরীরে প্রদাহ ও রক্তে শর্করার ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
পরিবর্তে: সাদা রুটির পরিবর্তে মাল্টিগ্রেইন বা মিলেট রুটি বেছে নিন। এতে বেশি ফাইবার থাকে। সঙ্গে ডিম বা পনির যোগ করলে প্রোটিনও যোগ হবে। রঙিন সবজি যোগ করুন এবং উপভোগ করুন।
৪. বিস্কুটের সঙ্গে চা বা কফি
সকালের শুরুতে এই কম্বিনেশন অনেকের প্রিয় হলেও এটি একটি মারাত্মক অভ্যাস। এতে কোনো পুষ্টিগুণ নেই, শুধু ফাঁপা কার্বোহাইড্রেট যা আপনাকে দ্রুত ক্ষুধার্ত করে তোলে ও মিষ্টির প্রতি আকর্ষণ বাড়ায়।
পরিবর্তে: চা বা কফি খান পরিপূর্ণ একটি নাস্তার পরে। বিস্কুটের বদলে কিছু বাদাম বা ডিম খান, যা অনেক বেশি পুষ্টিকর।
৫. ইনস্ট্যান্ট ওটস
অনেকে ভাবেন ইনস্ট্যান্ট ওটস খুবই পুষ্টিকর। কিন্তু বাস্তবে এতে ফাইবার ও প্রোটিন কম থাকে এবং এটি খাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই শরীরে শক্তি কমে যায় ও খিদে বেড়ে যায়।
পরিবর্তে: রোলড ওটস ব্যবহার করুন, সঙ্গে চিয়া বীজ, বাদামের মাখন ও মৌসুমি ফল যোগ করুন। এতে সকালের নাস্তায় মিলবে ভারসাম্যপূর্ণ পুষ্টি।
আবির
