
ছবি: প্রতীকী
চিরস্থায়ী রাসায়নিক বা ‘ফরেভার কেমিকেল’—যা আমাদের পানির বোতল, ফাস্ট ফুড প্যাকেট, মেকআপ সামগ্রী কিংবা নন-স্টিক কুকওয়্যারে লুকিয়ে থাকে—সেগুলো মানবদেহে একবার ঢুকলে সহজে বের হয় না। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় আশার আলো দেখা যাচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, ওটস থেকে তৈরি এক সাধারণ ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট প্রতিদিন খাবারের আগে খেলে শরীর থেকে এই বিষাক্ত রাসায়নিক ধীরে ধীরে বের করে দেওয়া সম্ভব।
ওটস ফাইবারেই মিলছে সমাধান?
গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতিদিনের প্রতিটি খাবারের আগে ১ গ্রাম করে ওট বিটা-গ্লুকান (এক ধরনের জেল তৈরি করা যায় এমন দ্রবণীয় ফাইবার) খেলে দুটি মারাত্মক PFAS রাসায়নিক—PFOA ও PFOS—এর শরীরে উপস্থিতির মাত্রা প্রায় ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব।
PFAS বা ‘পার ও পলিফ্লুরোঅ্যালকাইল সাবস্ট্যান্সেস’—এদের ‘চিরস্থায়ী রাসায়নিক’ বলা হয় কারণ এগুলো শত শত বছর ধরে পরিবেশে অবিনাশী থেকে যায় এবং শরীরেও জমতে থাকে। এই রাসায়নিক প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস, শিশুদের বিকাশে বিলম্ব, এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতেও ভূমিকা রাখে বলে বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে।
কীভাবে করা হয়েছিল গবেষণা?
কানাডার ১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সী ৭২ জন পুরুষের উপর এই গবেষণা চালানো হয়, যাদের রক্তে PFAS-এর উপস্থিতি ছিল। তাদের মধ্যে ৪২ জনকে দেওয়া হয় প্রতিদিন খাবারের আগে ১ গ্রাম ওট ফাইবার সাপ্লিমেন্ট, আর বাকি ৩০ জনকে দেওয়া হয় প্লাসিবো হিসেবে চালের গুঁড়ো।
চার সপ্তাহ পরে দেখা যায়, যারা ওটস ফাইবার সাপ্লিমেন্ট খেয়েছিলেন তাঁদের শরীরে দুই ধরনের PFAS-এর উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
এখনো আছে সীমাবদ্ধতা
গবেষণাটি ছিল ছোট পরিসরের, তাই গবেষকরা বলছেন, এ নিয়ে আরও বিস্তৃত গবেষণা প্রয়োজন। বড় জনগোষ্ঠীর উপর দীর্ঘমেয়াদী ট্রায়াল, বিভিন্ন মাত্রার PFAS ও দীর্ঘ সময় ধরে ফাইবার খাওয়ার ফলাফল যাচাই করলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে এই পদ্ধতি কতটা কার্যকর।
তবে গবেষকরা এটিকে PFAS দূরীকরণের পথে একটি ‘বাস্তবসম্মত ও সহজে প্রয়োগযোগ্য’ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
রাকিব