
ছবি: সংগৃহীত
সুরিনাম ও তানজানিয়ার বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের তীব্র নিরাপত্তা ত্রুটির কারণে এই দুটি দেশের প্রত্যেকটি এয়ারলাইন্সকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আকাশপথে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় কমিশনের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে সুরিনাম ও তানজানিয়ার যেকোনো এয়ারলাইন্স ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে বা এসব দেশের আকাশপথ ব্যবহার করে আর বিমান চলাচল করতে পারবে না।
কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের নিরাপত্তা মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের এভিয়েশন সেফটি এজেন্সি (EASA) এর সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালিত কারিগরি মূল্যায়নে দুই দেশের জাতীয় বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে গুরুতর ত্রুটির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সুরিনাম এবং তানজানিয়াকে এই তালিকায় যুক্ত করার মাধ্যমে বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এয়ার সেফটি লিস্টে নিষিদ্ধ এয়ারলাইন্সের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬৯টি। এর মধ্যে ১৭টি দেশের ১৪২টি এয়ারলাইন্স রয়েছে, যেগুলোর রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে নিরাপত্তার ঘাটতি রয়েছে বলে বিবেচিত হয়েছে।
এছাড়াও বিশেষভাবে নিরাপত্তা ঘাটতির কারণে আরও পাঁচটি এয়ারলাইন্স নিষিদ্ধ হয়েছে, যেগুলো হলো:
* এয়ার জিম্বাবুয়ে (Zimbabwe)
* অ্যাভিওর এয়ারলাইন্স (Venezuela)
* ইরান অ্যাসেমন এয়ারলাইন্স (Iran)
* ফ্লাই বাগদাদ (Iraq)
* ইরাকি এয়ারওয়েজ (Iraq)
তবে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে দুটি এয়ারলাইন্স—ইরান এয়ার ও উত্তর কোরিয়ার এয়ার কোরিও—নির্দিষ্ট কিছু বিমান দিয়ে সীমিত পরিসরে ইউরোপীয় আকাশপথ ব্যবহারের অনুমতি পাচ্ছে।
সুরিনামের প্রধান ও জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা Surinam Airways (PY) ইতোমধ্যেই কায়েন (ফ্রেঞ্চ গিয়ানার রাজধানী, যা ফ্রান্সের অংশ এবং ইইউ আওতাভুক্ত) রুটে তাদের ফ্লাইট স্থগিত করেছে। অন্যদিকে, Air Tanzania (TC), যারা আগেই সীমিত নিষেধাজ্ঞায় ছিল, এবার সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে, যার ফলে তানজানিয়ার কোনও এয়ারলাইন্সই আর ইউরোপীয় অঞ্চলে প্রবেশ করতে পারবে না।
ইইউ কমিশনার আপোস্তোলোস তজিৎসিকস্তাস বলেন, “বিমান যাত্রায় যাত্রীদের নিরাপত্তাই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। সুরিনাম ও তানজানিয়া যাতে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী তাদের বিমান নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে, সেজন্য আমরা কারিগরি সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছি।”
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এ সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী বিমান নিরাপত্তার মান বজায় রাখার ক্ষেত্রে একটি কঠোর বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আসিফ