
ছবি: সংগৃহীত
গাজার আকাশে ঈদের আনন্দের পরিবর্তে ছড়িয়েছে আগুন আর মৃত্যু। ঈদের দিন সকালে গাজা শহরের সাবরা এলাকায় ইসরায়েলের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে ধ্বংস হয় বহু আবাসিক ভবন। আগুনে জ্বলে ওঠে বহুতল ভবনের একাধিক তলা। বেসামরিক নাগরিক, শিশু ও বৃদ্ধদের আর্তনাদে ভারী হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
স্থানীয়রা জানান, আবুশারিয়া পরিবারের বাড়িতে ঈদের নামাজ শেষে সকালের খাবারের প্রস্তুতি চলছিল। ঠিক সেই সময়েই তাদের বাড়িতে আঘাত হানে ক্ষেপণাস্ত্র। পরিবারের ২৫ জন সদস্যের অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েন। পুরো ভবনটি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।
এদিকে ইসরায়েলের এ নির্লজ্জ আগ্রাসনের পরও যুক্তরাষ্ট্রের নিরব সমর্থনের প্রতিবাদে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদা। সংগঠনটির ইয়েমেন শাখার নেতা সাদ বিন আতেফ আল আওলা এক ভিডিও বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, টেসলা সিইও ইলন মাস্কসহ মার্কিন প্রশাসনের কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে সরাসরি হত্যার হুমকি দিয়েছেন।
প্রায় ৩০ মিনিটের ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প ও মাস্কের ছবি, টেসলা এবং স্পেসএক্সের লোগোসহ মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যানস, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেক্সেতের ছবি দেখানো হয়।
অন্যদিকে, দীর্ঘমেয়াদি অবরোধ ও হামলার ফলে গাজা উপত্যকায় পৌঁছায়নি জরুরি ত্রাণ। এতে করে সেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম পৌঁছেছে অস্বাভাবিক মাত্রায়।
বর্তমানে গাজার বাজারে এক লিটার রান্নার তেলের দাম প্রায় ৬০০০ টাকা, এক কেজি চিনির দাম ৭০০০ টাকা ছাড়িয়েছে। এক কেজি গুঁড়ো দুধ কিনতে গাজাবাসীকে গুণতে হচ্ছে ১২২৪ টাকা, ময়দার দাম ২১০০ টাকা কেজি, লবণ ৭০০ টাকা, আলু ২৮০০ টাকা ও টমেটো ১৫৭৪ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং বিদ্যুৎ সংকটে গাজাবাসী চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারা বলছে, অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, যুদ্ধ থামাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এই সংকট আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
ফারুক