
ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানির পশু জবাইয়ের পর সঠিকভাবে চামড়া সংরক্ষণ না করলে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফলে ন্যায্যমূল্য পাওয়া যেমন কঠিন হয়, তেমনি দেশের চামড়া শিল্পেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই কোরবানির পরপরই গরুর চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণ করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চামড়া নষ্ট হওয়ার প্রধান কারণ:
বিশেষজ্ঞদের মতে, সময়মতো লবণ না দেওয়া, পানি থেকে চামড়া না শুকানো, পরিষ্কারভাবে না ধোয়া এবং যথাযথভাবে চামড়া না মেলানোই বেশি চামড়া নষ্ট হওয়ার মূল কারণ।
চামড়া সংরক্ষণের সঠিক পদ্ধতি:
১. দ্রুত লবণ দেয়া:
জবাইয়ের ২ ঘণ্টার মধ্যে চামড়ায় পর্যাপ্ত লবণ দেওয়া উচিত। প্রতি বর্গফুট চামড়ায় গড়ে ৪০০–৫০০ গ্রাম মোটা দানার লবণ (খাদ্য বা আয়োডিনযুক্ত নয়) ব্যবহার করতে হয়।
২. রক্ত ও ময়লা পরিষ্কার করা:
চামড়া কেটে নেওয়ার পর তা ভালোভাবে উল্টে ভেতরের অংশ থেকে রক্ত, চর্বি ও ময়লা পরিষ্কার করে নিতে হবে।
৩. ছায়াযুক্ত শুকনো জায়গায় রাখা:
চামড়া কখনও রোদে শুকানো যাবে না। ছায়াযুক্ত, বায়ু চলাচলযোগ্য ও উঁচু জায়গায় চামড়া বিছিয়ে রাখতে হবে। ভাঁজ করে রাখা যাবে না।
৪. প্লাস্টিক বা পলিথিনে ঢেকে রাখা যাবে না:
চামড়া ঢেকে দিলে বাতাস চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে পচে যেতে পারে।
৫. পোকামাকড় থেকে রক্ষা:
চামড়ার চারপাশে কীটনাশক ছিটিয়ে দিলে পোকামাকড় দূরে থাকে।
বিকল্প সংরক্ষণ পদ্ধতি:
যদি পর্যাপ্ত লবণ না পাওয়া যায়, তাহলে চুন-লবণ বা সোডা অ্যাশ ও ন্যাপথলিনের মিশ্রণ ব্যবহার করে সাময়িক সংরক্ষণ করা যায়। তবে এসব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নেওয়া উচিত।
স্থানীয় প্রশাসনের পরামর্শ:
রংপুর নগরীর পশুর হাটগুলোতে ইতোমধ্যে চামড়া সংরক্ষণ বিষয়ে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগর কর্তৃপক্ষ। পশু জবাইয়ের পর দ্রুত চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণের জন্য স্থানীয়দের আহ্বান জানানো হয়েছে।
সংরক্ষণ ভালো হলে মূল্যও ভালো পাওয়া যায়, তাই চামড়া বিক্রির আগে একটু সচেতন হলেই একদিকে পরিবেশ রক্ষা হবে, অন্যদিকে বাড়তি অর্থ আয় সম্ভব হবে।
আঁখি