
দৈনিক জনকণ্ঠ
৬ দিন বন্ধ থাকার পর পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্র। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে গত ৩০ মে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল উপজেলা প্রশাসন।
পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ৬জুন থেকে উপজেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির সদস্যগণের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া কিছুটা অনুকূলে থাকায় সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোতে উপস্থিতির হার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঈদের দিন থেকে পর্যটকরা ছুটে আসছেন সিলেটে। সিলেটের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কোম্পানীগঞ্জের সাদা পাথর, গোয়াইনঘাটের জাফলং, জৈন্তাপুরের লালাখালসহ অন্যান্য পর্যটন স্পট ও চা বাগানগুলোতে পর্যটকরা ছুটছেন দলবদ্ধ হয়ে। সবুজের গালিচা বিছানো ছোট বড় পাহাড় টিলা বেষ্টিত প্রকৃতির নয়ন জুড়ানো সৌন্দর্য উপভোগ করতে জাফলং এলাকায় পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে।
জাফলং, বিছনাকান্দি, সোয়াম ফরেস্ট রাতারগুল ছাড়াও পানতুমাই ঝরনা, জাফলং চা বাগান ও মায়াবী ঝরনা এলাকায় পর্যটকদের উপস্থিতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঈদের দিন থেকে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকের আগমন শুরু হয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
পর্যটকদের আগমনকে ঘিরে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে হোটেল মোটেল রিসোর্টের ব্যবসা। বিভিন্ন স্পটে পসরা সাজিয়ে অস্থায়ী টং দোকানের ছোট ব্যবসায়ীরাও দেদার ব্যবসা করছেন।
পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি মিডিয়া সাইফুল ইসলাম জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিনোদন কেন্দ্রের ভেতরে ও কেন্দ্রগুলোর বাইরে পুলিশের টহল সব সময় আছে। কারো কোনো সমস্যা হলে আমাদেরকে অবহিত করলে আমরা তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এদিকে সাদাপাথর এলাকায় ঘুরতে আসা পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করছে কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। পর্যটন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিক বিষয়ে কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, পর্যটন কেন্দ্রে আসা মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা ও সুব্যবস্থা নিশ্চিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এখানকার থানা পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছেন।
ঈদের মৌসুম হওয়ার কারণে আমরা আনসার মোতায়েন করেছি, সেই সঙ্গে থানা পুলিশের একটি টিম এখানে কাজ করছে। পর্যটকদের গাড়ি পার্কিং এরিয়াতে ট্র্যাফিক পুলিশ কাজ করেছে। নৌঘাট থেকে প্রায় দেড় হাজার নৌকা পর্যটন স্পটে যাওয়া আসা করছে। কোথাও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। চারদিকেই বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব পরিবার-পরিজন শিশু-কিশোরদের আনন্দ উল্লাসে জাফলংয়ের সবুজ প্রকৃতিতে এখন অন্যরকম প্রাণচাঞ্চল্য। এছাড়া জাফলং পর্যটনকেন্দ্র ছাড়াও বিছনাকান্দি,সোয়াম ফরেস্ট রাতারগুল, স্বচ্ছ ও নীল পানির লালাখাল, পান্তুমাই ঝরনাসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে ব্যস্ততা। এসব স্পট পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত।
আবাল বৃদ্ধ বনিতা নানা শ্রেণি পেশার মানুষের আগমনে উপজেলার সব জায়গায় এখন মানুষের কোলাহল হই হুল্লোড়ে আনন্দের হাওয়া বইছে। তারা পুলিশের সদস্যরা ও নিয়মিত নিরাপত্তার জন্য কাজ করছেন। পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে টুরিস্ট পুলিশ, গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ, বিজিবি,বাংলাদেশ স্কাউট, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট ও আনসার সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে।
জাফলং টুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ বলেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটক মুখরিত ছিল জাফলং। আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় টুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা কাজ করছেন।
লাক্কাতুড়া চা বাগান সিলেট নগরীর দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। সবুজে ঘেরা মনোরম পরিবেশ, উঁচু-নিচু পাহাড়ি পথ, আর চায়ের সবুজ গালিচায় মোড়ানো এই বাগান শহরের কোলাহল থেকে দূরে এক প্রশান্তির স্থান হিসেবে নগরবাসীর কাছে পরিচিত। সারাবছরই এখানে দর্শনার্থীদের ভিড় থাকে। ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের চাপ আরও বেড়েছে।
হ্যাপী