ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৯ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

হুতির কৌশলে ধরাশায়ী আমেরিকা, নৌ যুদ্ধে নতুন নজির গড়ল বীরেরা

প্রকাশিত: ২১:০৩, ৮ জুন ২০২৫

হুতির কৌশলে ধরাশায়ী আমেরিকা, নৌ যুদ্ধে নতুন নজির গড়ল বীরেরা

ছবি:সংগৃহীত

লোহিত সাগরে সাম্প্রতিক সময়ের সংঘাতে আধুনিক নৌযুদ্ধের ধারণা বদলে দিয়েছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। স্বল্প ব্যয়ে তৈরি ড্রোন ও মিসাইল ব্যবহার করে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী নৌবাহিনী, যুক্তরাষ্ট্রকে বারবার প্রতিরোধের মুখে ফেলেছে তারা। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে স্পষ্ট, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিপুল সামরিক ব্যয় দিয়েও বিদ্রোহীদের অপ্রচলিত কৌশলের কাছে নতি স্বীকার করতে হয়েছে মার্কিন সেনাবাহিনীকে।

 

 

হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে লোহিত সাগরে দীর্ঘদিন ধরে মোতায়েন রয়েছে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী *ইউএসএস হ্যারি এস. ট্রুম্যান*। ১.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে পরিচালিত এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র ব্যবহার করেছে ৩০টিরও বেশি যুদ্ধজাহাজ ও ডজনখানেক রিপার ড্রোন, যার প্রতিটির মূল্য ৩০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। তবুও হুথিদের মিসাইল ও ড্রোন হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে মার্কিন বাহিনী।

গত ৬ মে, এই রণতরী থেকে নামার সময় একটি F/A-18 সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। প্রায় ৬৭ মিলিয়ন ডলার মূল্যের এ বিমানটি ছিল পাঁচ মাসের ব্যবধানে ইউএসএস ট্রুম্যান থেকে বিধ্বস্ত হওয়া তৃতীয় যুদ্ধবিমান। দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেই হুথিদের সঙ্গে আকস্মিক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই ঘোষণায় হতবাক হন পেন্টাগনের শীর্ষ কর্মকর্তারা, কারণ তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের সমন্বয় ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এদিকে, যুদ্ধবিরতির আগে যুক্তরাষ্ট্র F-35 স্টেলথ বোমার মাধ্যমে ইয়েমেনে হামলা জোরদার করে, যাতে হুথিদের শত শত যোদ্ধা নিহত হয় এবং অস্ত্রের গুদাম ধ্বংস হয়। তবুও হুথিদের রোখা যায়নি। তারা ইসরাইল লক্ষ্য করে উন্নত ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোড়ে, যা তাদের ক্রমাগত সক্ষমতা বৃদ্ধির স্পষ্ট ইঙ্গিত।

 

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, হুথিরাই ইতিহাসে প্রথম বিদ্রোহী গোষ্ঠী যারা অ্যান্টি-শিপ ব্যালিস্টিক মিসাইল ব্যবহার করেছে। তাদের সাফল্য বিশ্বজুড়ে সামরিক কৌশলবিদদের নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। মার্কিন এক কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, “হুথিদের মিসাইল দিন দিন আরও উন্নত হচ্ছে। আমরা আপাতভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি, কিন্তু এভাবে আর কতদিন? এটা সত্যিই উদ্বেগজনক।

 

লোহিত সাগরের সংকীর্ণ জলপথে একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সুপারপাওয়ার যুক্তরাষ্ট্রের এমন নাজুক অবস্থান আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিচ্ছে। কম খরচে কৌশলগত সাফল্যের নতুন দৃষ্টান্ত হয়ে উঠছে হুথিরা।
 

ছামিয়া

×