
সংগৃহীত
নতুন শিশু জন্মের পর মায়েদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি হচ্ছে সন্তানের ঘুমের সমস্যা। রাতভর কান্না, জেগে ওঠা কিংবা ঘুম ভেঙে মায়ের পাশে যাওয়ার প্রবণতা অনেক পরিবারের নিত্যদিনের ঘটনা।
এই সংকট থেকে মুক্তির জন্য একটি কার্যকর পদ্ধতি সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে, যা শিশুদের ঘুমের অভ্যাস গড়তে সাহায্য করছে।
- শিশুর ঘুমের আগে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। শিশুকে হালকা গরম পানিতে গোসল করানো, আরামদায়ক পোশাক পরানো এবং নরম আলোতে বই পড়ে ঘুমানোর জন্য প্রস্তুত করা উচিত। শান্ত পরিবেশ শিশুকে মানসিকভাবে আরাম দেয় এবং ঘুমের জন্য প্রস্তুত করে।
- শিশুকে প্রথমে মায়ের কাছে ঘুমানো হলেও ধীরে ধীরে তার নিজস্ব বিছানায় ঘুমানোর অভ্যাস গড়তে হবে। শুরুতে পাশে থেকে সাহায্য দেয়া যেতে পারে, পরে ধীরে ধীরে দূরে সরে যাওয়ার মাধ্যমে শিশুকে নির্ভরশীল হতে সাহায্য করা যায়। নিজস্ব বিছানায় ঘুমানো শিশুর স্বাধীনতা ও আত্মনির্ভরতা বাড়ায়।
- একই সময় নির্দিষ্ট রুটিন বজায় রাখা শিশুদের শরীর ও মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া অভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা অপরিহার্য। একদিন নিয়ম মানলেও পরের দিন তা না মানলে শিশুরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়তে পারে এবং অভ্যাস গড়তে সময় লেগে যেতে পারে। ধারাবাহিকতা শিশুর জন্য নিরাপত্তাবোধ তৈরি করে এবং ঘুমের একটি স্থায়ী ছাপ ফেলে।
- শিশুর ঘুমের সময় উত্তেজক বিষয়বস্তু থেকে দূরে রাখা উচিত। বিশেষ করে ঘুমানোর আগে কার্টুন, মোবাইল স্ক্রিন বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস দেখানো থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন, কারণ এগুলো শিশুর ঘুমে বাধা সৃষ্টি করে। উত্তেজক কনটেন্ট শিশুদের মস্তিষ্ক অতিরিক্ত সক্রিয় করে ঘুমের রুটিন ব্যাহত করে।
- ঘুমের আগে উত্তেজক বা উদ্বেগ সৃষ্টি করে এমন কোনও শো বা ভিডিও দেখানো থেকে পুরোপুরি বিরত থাকা জরুরি। এই ধরনের শো শিশুদের মনে উদ্বেগ ও উত্তেজনা সৃষ্টি করে, যা ঘুমকে ব্যাহত করে এবং গভীর ঘুমের বাধা সৃষ্টি করে। শিশুর মানসিক শান্তির জন্য ঘুমের আগে শান্তিপূর্ণ, নরম এবং স্নিগ্ধ পরিবেশ বজায় রাখা প্রয়োজন।
- ঘুম শেখানোর সময় শিশুর কষ্টকে বুঝে ধৈর্য ও ভালোবাসার সঙ্গে ধাপে ধাপে কাজ করতে হবে।জোরপূর্বক কোনো কিছু করানো শিশুর জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। শিশুর প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব ও ধৈর্যপূর্ণ আচরণ ঘুমের অভ্যাস গড়তে সহায়ক হয়।
বর্তমান সময়ে এই ধরনের পদ্ধতি বহু মা-বাবার কাছে উপকারী প্রমাণিত হচ্ছে। বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে গড়ে উঠা এসব পরামর্শ শিশুদের ঘুমের সমস্যা দূর করতে সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
হ্যাপী