
সংগৃহীত
স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের জন্য সুখবর নিয়ে এলেন হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ড প্রশিক্ষিত গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ড. সৌরভ সেথি। তিনি সম্প্রতি তিনটি বিশেষ খাবারের সংমিশ্রণ সম্পর্কে জানিয়েছেন, যা শুধু পুষ্টি জোগানোর বাইরে, মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ানো থেকে শুরু করে হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ড. সেথি বলেন, “আমাদের শরীরের পক্ষে শুধু ভালো খাবার খাওয়া যথেষ্ট নয়, সেই খাবারগুলোকে কীভাবে একসাথে মিলিকে খাচ্ছি তাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সংমিশ্রণ আমাদের স্বাস্থ্যের বিভিন্ন দিককে বহুগুণে উন্নত করতে পারে।”
তিনি তিনটি বিশেষ খাবারের জুটির কথা বলেছেন, যেগুলো নিয়মিত খাদ্য তালিকা অন্তর্ভুক্ত করা গেলে মস্তিষ্ক, পেট ও পুরো শরীরের উপকারে আসে।
প্রথম খাবার হলো কোকো ও কফি। কফিতে থাকা ক্যাফেইন দ্রুত সতর্কতা এবং মনোযোগ বৃদ্ধি করে। অপরদিকে কোকোর থিওব্রোমিন উপাদান মনকে শান্ত রাখে এবং চাপ কমাতে সাহায্য করে। এই দুটি উপাদান একসাথে খেলে মেজাজ উন্নত হয় এবং মানসিক শক্তি বাড়ে। এই সংমিশ্রণে তৈরি একটি সহজ পানীয় হলো এক কাপ গরম কফিতে এক চা চামচ কোকো পাউডার মিশিয়ে পান করা। চাইলে মধু ও সামান্য দারচিনি যোগ করা যাবে।
দ্বিতীয় সবজি হলো ব্লুবেরি ও আখরোট। ব্লুবেরিতে থাকা পলিফেনলস মস্তিষ্কের নিউরোন সংযোগ শক্তিশালী করে এবং প্রদাহ কমানো। অন্যদিকে আখরোটে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি ফ্যাটি স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে কার্যকর। এই দুটি উপাদান একসাথে গ্রহণ করলে মানসিক চাপ কমে এবং মস্তিষ্কের বার্ধক্যজনিত সমস্যা ধীর হয়। সহজ রেসিপির মধ্যে দই বা গ্রিক ইয়োগার্টের সঙ্গে আধা কাপ ব্লুবেরি এবং কিছুটা কুচি করা আখরোট মিশিয়ে নাস্তার সময় খাওয়া যাবে।
তৃতীয় সংমিশ্রণটি হলো ওটস ও দই। ওটসে থাকা বিটা-গ্লুকান অন্ত্রের স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্টি জোগানো, এবং দইয়ের প্রোবায়োটিকস সেই ব্যাকটেরিয়ার কার্যক্ষমতা বাড়ায়। ফলে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয়, গ্যাস ও অম্বল কমে যাবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যও নিমন্ত্রণে থাকে। এই সংমিশ্রণ গ্রহণের জন্য, আধা কাপ ওটস গরম পানিতে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে তার সঙ্গে আধা কাপ টক দই মিশিয়ে খাওয়া যাবে। চাইলে এর সঙ্গে কলা বা আপেল যোগ করা যেতে পারে।
ড. সেথির মতে, এই তিনটি সহজ খাবারের সংমিশ্রণ মস্তিষ্ক ও হজম ছাড়াও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরের সামগ্রিক প্রক্রিয়া আরও সক্রিয় ও সজীব করে তোলে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও এই পরামর্শকে সমর্থন জানিয়েছেন। তাদের মতে, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবারগুলোকে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে একত্র করে খেলে তা স্বাস্থ্যের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এই খাবারের সংমিশ্রণগুলি দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে সহজেই অন্তর্ভুক্ত করা যাবে এবং তা দীর্ঘ মেয়াদে সুস্থ জীবনধারার অন্যতম ভিত্তি হয়ে উঠতে পারে
হ্যাপী