
ছবি: জনকন্ঠ
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে দাঁড়িয়ে আছে এক নিঃসঙ্গ ইতিহাস—দেওয়ান আনোয়ারের বাড়ি। দুই শত বছরের পুরোনো এই স্থাপনাটি এখন পরিত্যক্ত, ধ্বংসস্তূপে রূপ নিয়েছে একসময়ের রাজকীয় বাড়িটি। স্থানীয়রা এখন একে বলেন "ভূতের বাড়ি"।
বাড়িটির চারদিকে খসে পড়ছে দেয়াল। ছাদে জমেছে শ্যাওলা, ঘরের ভেতরে ধুলো, ময়লা আর জঞ্জাল। একসময় ছিল আভিজাত্যের প্রতীক, এখন শুধুই স্মৃতি।
বাড়িটির পশ্চিম পাশে রয়েছে একটি প্রাচীন পুকুর। পাড়ে পড়ে আছে ভাঙা ঘাটলা। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বড় বড় গাছগুলো যেন বাড়ির নিঃসঙ্গতাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
স্থানীয় প্রবীণ অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা বলেন, “জন্ম থেকে দেখে আসছি এই বাড়ি। কত ইতিহাস জমে আছে এখানে। প্রতিদিনই মানুষ দেখতে আসে। কেউ ছবি তোলে, কেউ শুধু দাঁড়িয়ে থাকে কিছুক্ষণ।”
এই বাড়িকে ঘিরে রয়েছে এক সমৃদ্ধ অতীত। জমিদার আনোয়ার দেওয়ান ছিলেন তৎকালীন সময়ের প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাঁর হাত ধরেই গড়ে উঠেছিল এই চমৎকার স্থাপনা। ইট, পাথর ও সুরকির গাঁথুনিতে তৈরি এই বাড়ি একসময় ছিল এলাকার গর্ব।
স্থানীয় শিক্ষার্থী ও তরুণদের দাবি, “বাড়িটিকে সংরক্ষণ করা হোক। সংস্কার করে তৈরি হোক একটি ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্র।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেওয়ানবাড়ির স্থাপত্য ও ঐতিহাসিক মূল্য পর্যটনের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। এর মাধ্যমে যেমন ইতিহাস সংরক্ষিত হবে, তেমনি বাড়বে এলাকার অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও।
বস্তুত, মানিকগঞ্জ সদর থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি এখনই সংরক্ষণ না করলে হারিয়ে যাবে একটি মূল্যবান ইতিহাস।
চাইলেই জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এটি সংরক্ষণ করা সম্ভব। সংস্কার, নিরাপত্তা ও পর্যটন উন্নয়নের মাধ্যমে দেওয়ানবাড়ি হতে পারে মানিকগঞ্জের গর্ব, দেশের ঐতিহ্য।
Mily