ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পরীক্ষার আগে সন্তানকে কী বলবেন, কী বলবেন না

প্রকাশিত: ১৪:১৮, ৭ জুন ২০২৫

পরীক্ষার আগে সন্তানকে কী বলবেন, কী বলবেন না

ছবি: সংগৃহীত

পরীক্ষা! এই শব্দটি শুনলেই শিশুদের মনে এক ধরনের ভয় বা চাপ কাজ করে। এই সময়ে বাবা-মায়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার বলা বা না বলা কথা সন্তানের মানসিকতায় বড় প্রভাব ফেলতে পারে। পরীক্ষা-ভীতি কাটিয়ে সন্তানকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।

যা বলবেন না:

  • বারবার পড়া হয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করবেন না: সন্তানকে বারবার "কতটুকু পড়া হয়েছে?" বা "সব সিলেবাস শেষ করেছো?"—এসব প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকুন। এতে তাদের উপর চাপ বাড়ে এবং মনে হতে পারে তারা যথেষ্ট নয়। আপনার উদ্বেগের বদলে তাদের প্রতি আস্থা রাখুন।
  • আগের খারাপ ফলাফল মনে করিয়ে দেবেন না: সন্তানের অতীতের খারাপ রেজাল্ট বা ভুলগুলো পরীক্ষার ঠিক আগে মনে করিয়ে দেওয়া তাদের মনোবল ভেঙে দিতে পারে। এতে তারা হতাশ হয়ে পড়ে এবং মনে করে যে তারা আবারও ব্যর্থ হবে। বরং তাদের বর্তমান প্রচেষ্টা ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনার উপর জোর দিন।
  • অবাস্তব প্রত্যাশা রাখবেন না: "তোমাকে ফার্স্ট হতেই হবে" বা "ফুল মার্কস পেতে হবে"—এমন অবাস্তব প্রত্যাশা সন্তানের উপর বিশাল মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। মনে রাখবেন, প্রতিটি শিশুর মেধা ও শেখার ধরন ভিন্ন। তাদের সাধ্য অনুযায়ী প্রত্যাশা রাখুন এবং শেখার প্রক্রিয়াকে নম্বরের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিন।
  • একবারে বেশি পড়াবেন না: পরীক্ষার আগের রাতে বা শেষ মুহূর্তে সন্তানকে একসাথে অনেক কিছু পড়ানোর চেষ্টা করবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা সীমিত এবং অতিরিক্ত চাপ মনোযোগ ও স্মরণশক্তির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
  • অন্য বাচ্চার সাথে তুলনা করবেন না: "অমুক এত ভালো করছে, তুমি কেন পারছো না?"—এমন তুলনা সন্তানের আত্মসম্মানবোধে আঘাত করে এবং তাদের মধ্যে হীনমন্যতা তৈরি করে। প্রতিটি শিশু অনন্য, তাদের নিজস্ব গতিতে শিখতে দিন।

যা বলবেন:

  • আগের থেকে অল্প অল্প করে পড়ানোর অভ্যাস করান: পরীক্ষার আগে থেকেই অল্প অল্প করে প্রতিদিন পড়াশোনা করার অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করুন। এটি শেষ মুহূর্তের চাপ কমাবে এবং পড়া ভালোভাবে আয়ত্ত করতে সাহায্য করবে। রুটিন মেনে পড়ালেখার গুরুত্ব বোঝান।
  • বাচ্চার চেষ্টাকে প্রশংসা করুন: ফলাফলের চেয়ে সন্তানের চেষ্টাকে বেশি মূল্যায়ন করুন। বলুন, "তুমি যে চেষ্টা করছো, এটাই সবচেয়ে বড় কথা।" বা, "আমি জানি তুমি তোমার সেরাটা দিচ্ছ।" এতে তারা অনুপ্রাণিত হবে এবং আরও ভালো করার আগ্রহ পাবে।
  • ভালো করলে লোভ দেখাবেন না: "ভালো রেজাল্ট করলে অমুক গিফট দেব" —এমন লোভ দেখানো থেকে বিরত থাকুন। এতে সন্তানের মনোযোগ শেখার প্রক্রিয়া থেকে সরে গিয়ে পুরস্কারের দিকে চলে যায়। তাদের শেখার প্রতি আগ্রহ তৈরি হোক, পুরস্কারের আশায় নয়।

পরীক্ষার সময় সন্তানের পাশে থাকুন বন্ধুর মতো। তাদের চাপমুক্ত রাখতে সাহায্য করুন এবং তাদের আত্মবিশ্বাসের মূল উৎস হয়ে উঠুন। আপনার সমর্থন তাদের পরীক্ষার ভীতি কাটিয়ে ভালো পারফর্ম করতে সাহায্য করবে। তথ্যসূত্র: Farjana Peash 

সাব্বির

×