
ছবি: সংগৃহীত
কোরবানির ঈদের পরদিন থেকেই চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর, আতুরা ডিপো এবং অক্সিজেন এলাকার রাস্তা জুড়ে দেখা গেছে চামড়াবাহী ট্রাক ও পিকআপের দীর্ঘ সারি। এসব গাড়ির বেশিরভাগই এসেছে জেলার গ্রামাঞ্চল থেকে, মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে সংগৃহীত কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে।
তবে চামড়ার প্রকৃত মূল্য না পাওয়ায় হতাশ হয়েছেন তারা। মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় বড় আকৃতির চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে, যেখানে সরকারি নির্ধারিত দাম অনুযায়ী প্রতিটি চামড়ার মূল্য হওয়া উচিত ১০০০ থেকে ১১৫০ টাকার মধ্যে।
একজন মাদ্রাসা শিক্ষক জানান, “প্রতি পিস চামড়া ৩৫০ টাকা করে বিক্রি হলে আমাদের প্রায় ১২০০ টাকার মতো ক্ষতি হচ্ছে। এটা চামড়ার প্রকৃত দামের সিকিভাগও না।”
সরকার চলতি বছর প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, যা যোগ করলে একটি চামড়ার ন্যূনতম মূল্য দাঁড়ায় ১০০০ টাকা। কিন্তু ব্যবসায়ীরা লবণ, শ্রমিক খরচ এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের অজুহাতে অনেক কম দামে চামড়া কিনছেন বলে অভিযোগ।
এক ব্যবসায়ী বলেন, “সরকারি রেটে আমরা লবণযুক্ত চামড়া কিনছি। কিন্তু এখানে চামড়াগুলো কাঁচা অবস্থায় আসে, লবণ আমাদের দিতে হয়, শ্রমিক লাগে। সব খরচ মিলিয়ে একেকটা চামড়া ৫০০ টাকার বেশি পড়ে যায়। সেক্ষেত্রে কম দামে কিনতেই হয়।”
এরই মধ্যে গাউছিয়া কমিটি চট্টগ্রাম শহর ও বিভিন্ন উপজেলায় ঘুরে ঘুরে পাড়ামহল্লা থেকে চামড়া সংগ্রহ করেছে। তাদের সদস্যরা জানান, অনেক মানুষ স্বতঃস্ফুর্তভাবে চামড়া দান করেছেন। চামড়াগুলো লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
চট্টগ্রামে এবার প্রায় সাড়ে চার লাখ পিস কোরবানির চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। এসব চামড়া আগামী ১৫ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে পাঠানো হবে।
তবে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় স্থানীয় মাদ্রাসাগুলোর অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং সংগ্রাহকদের হতাশা আগামী বছরগুলোতেও চামড়া সংগ্রহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
ফারুক